একটি মামলায় ওয়ান্টেড তালিকায় থাকা এক অভিযুক্তকে ধরতে গিয়ে পুলিশের উপরে হামলা চালাল একদল জনতা। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলল গুলি, পাথর বৃষ্টি। দুপক্ষের মধ্যে শুরু হয় গুলির লড়াই। তাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল এক কনস্টেবলের। এছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে। নয়ডা পুলিশের একটি দল জনতার হামলার মুখে পড়ে। ঘটনায় খবর পেয়ে এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
আরও পড়ুন: কালীপুজোর ভাসানে ডিজে বন্ধ করতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ, জখম ১২, গ্রেফতার ৬
জানা গিয়েছে, নয়ডা পুলিশের একটি দল বিভিন্ন মামলায় ওয়ান্টেড অভিযুক্ত কাদেরকে ধরতে পৌঁছয় গাজিয়াবাদের মাসুরির একটি গ্রামে। সেখানেই কাদিরের বাড়ি। পুলিশ তাকে গ্রেফতারের পর গাড়িতে করে নিয়ে যেতেই বাধা দেয় স্থানীয়দের একাংশ। তারা পুলিশকে বাধা দিতে পাথর ছোড়ার পাশাপাশি গুলি চালায়। একটি গুলি লাগে নয়ডার ফেজ-২ থানায় কর্মরত কনস্টেবল সৌরভ কুমারের মাথায়। তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সৌরভ ছাড়াও ক্ষিপ্ত জনতার হামলায় আরও ২-৩ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁরা বর্তমানে চিকিৎসাধীন এবং তাঁদের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে জানা গিয়েছে। নয়ডার একজন সাব-ইন্সপেক্টরের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনায় একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছে পুলিশ। এদিকে, ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। বিশৃঙ্খলা ও গুলির লড়াইয়ের মধ্যে অভিযুক্ত কাদির তার সহযোগীদের সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযুক্তদের শীঘ্রই গ্রেফতার এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।
গ্রামীণ এলাকার ডিসিপি সুরেন্দ্র নাথ তিওয়ারি বলেন, রবিবার রাত ১১:৫৫ টা নাগাদ তাঁরা খবর পান যে নয়ডা পুলিশের একজন পুলিশ কর্মীকে গুলি করা হয়েছে এবং তাঁকে জরুরি চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে সৌরভ কুমারের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি জানান, নয়ডা পুলিশের একটি দল মাসুরির নাহাল গ্রামের বাসিন্দা কাদিরকে গ্রেফতার করতে এসেছিল। নয়ডায় একটি ডাকাতির মামলায় ওয়ান্টেড ছিল সে। মাসুরিতে অভিযান সম্পর্কে স্থানীয় পুলিশকে জানায়নি নয়ডা পুলিশ। একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নয়ডা পুলিশ কাদিরকে গ্রেফতার করে যখন গাড়িতে করে চলে যাচ্ছিল তখন প্রায় একদল জনতা হামলা চালায়। প্রথমে পুলিশের গাড়িতে পাথর ছুঁড়ে মারে। এরপর পুলিশ অফিসাররা গাড়ি থেকে নেমে আসেন। সেই সময় দুপক্ষের মধ্যে গুলির লড়াই শুরু হয়। নয়ডা পুলিশ কাদিরকে গ্রেফতার করে এবং হামলার পর গাজিয়াবাদ পুলিশের হাতে তুলে দেয়। জানা গিয়েছে, গাজিয়াবাদ, নয়ডা এবং দিল্লি-এনসিআরের বিভিন্ন থানায় কাদিরের বিরুদ্ধে ডাকাতি, চুরির মতো প্রায় ১৬টি মামলা রয়েছে।