শিখ ধর্মগুরু গুরু নানকের ৫৫৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন পাক প্রশাসনের। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে, এবছর গুরু নানকের জন্মজয়ন্তী পালন করতে একটি বিশেষ স্মারক মুদ্রা প্রকাশ করেছে পাকিস্তান।
গুরু নানকের জন্মজয়ন্তী পালন করতে প্রতি বছরই বহু শিখ ধর্মাবলম্বী ভারত থেকে পাকিস্তানে যান। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শনিবার সেই তীর্থযাত্রীরা যখন তাঁদের সফর শেষ করে ভারতে ফেরার তোড়জোড় করছেন, সেই মুহূর্তেই এই বিশেষ স্মারক মুদ্রাটি জনসমক্ষে আনা হয়।
গুরু নানকের জন্মজয়ন্তী পালিত হয় গত ১৪ নভেম্বর। সেই উপলক্ষে গত সপ্তাহ থেকেই পাকিস্তানের গুরুদ্বার জনম আস্থান নানকানা সাহিবে এক বিরাট উৎসব শুরু হয়। এখানেই শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানকের জন্ম হয়েছিল।
সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারত-সহ বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ শিখ তীর্থযাত্রীরা সেখানে পৌঁছে যান। লাহোর থেকে যার দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার।
এবছর গুরু নানকের ৫৫৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যে স্মারক মুদ্রাটি পাকিস্তান প্রকাশ করেছে, সেটির মূল্য ৫৫ পিকেআর (পাকিস্তানি টাকা)। যার এক পিঠে রয়েছে, গুরুদ্বার জনম আস্থান নানকানা সাহিবের একটি ছবি। সেই ছবির উপরের দিকে (ইংরেজিতে) লেখা রয়েছে, '৫৫৫তম জন্মজয়ন্তী পালন' এবং নীচের অংশে লেখা রয়েছে, 'শ্রী গুরু নানক দেব জি ১৪৬৯-২০২৪'।
মুদ্রাটির অপর দিকে আঁকা রয়েছে, একটি অর্ধচন্দ্র এবং পাঁচটি বাহুবিশিষ্ট একটি তারা। যা উত্তর-পশ্চিমমুখী এবং যেটি উদিত হচ্ছে। তারাটি আঁকা হয়েছে মুদ্রার একেবারে মাঝখানে। মুদ্রার এই পিঠের উপরের অংশে লেখা (উর্দুতে) রয়েছে - 'ইসলামি জামহুরিয়া পাকিস্তান' (ইসলামিক রিপাবলিক অফ পাকিস্তান)।
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তানের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই স্মারক মুদ্রাটি সরকারিভাবে ইস্য়ু করা হয়েছিল গত শুক্রবার। এটি তৈরি করতে ৭৯ শতাংশ পিতল, ২০ শতাংশ দস্তা এবং ১ শতাংশ নিকেল ব্যবহার করা হয়েছে। এটির ব্যাস ৩০ মিলিমিটার এবং এটির ওজন ১৩.৫ গ্রাম।
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তানের যতগুলি শাখা রয়েছে, সেগুলির সবক'টির এক্সচেঞ্জ কাউন্টারে এই স্মারক মুদ্রাটি পাওয়া যাবে।
গুরু নানকের জন্মজয়ন্তী পালনের পর, শনিবার যখন ভারতীয় শিখ তীর্থযাত্রীরা ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ভারতের ফিরছিলেন, সেই সময় তাঁদের সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন - পাকিস্তানের প্রথম শিখ মন্ত্রী তথা পাকিস্তান শিখ গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটির প্রধান রমেশ সিং অরোরা। তাঁর সঙ্গে অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন।
সেই বিশেষ মুহূর্তেই ঘরমুখো অতিথিদের হাতে বিশেষ উপহার তুলে দেওয়া হয়।
তীর্থযাত্রীরা এমন আয়োজনে আপ্লুত। তাঁদের একটি দলের নেতৃত্বে ছিলেন গুরমীত সিং নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, 'গুরুর ভূমিতে এসে আমরা সুন্দর কিছু স্মৃতি নিয়ে নিজেদের বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। সংবাদমাধ্যমে প্রায়ই পাকিস্তানের অনেক নেতিবাচক দিক প্রচার করা হয়। কিন্তু, বাস্তব অনেকটাই আলাদা। এখানকার মানুষ অন্যদের ভালোবাসতে এবং আপন করে নিতে জানে।'