পহেলগাঁওতে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত নামে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে। পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কে আসে নয়া শীতলতা। এদিকে, সেই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের 'সব মরশুমের বন্ধু' চিন, পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হানার নিন্দা করলেও, সেই চিনের দেওয়া অস্ত্রেই ভারতের সঙ্গে সংঘাতের আসরে নামে পাকিস্তান। এরপরও চিন থেকে নতুন করে যুদ্ধ বিমান কিনছে পাকিস্তান। এই পরিস্থিতিতে চিনে পা রাখলেন অজিত ডোভাল। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা চিনের মাটিতে দাঁড়িয়ে এবার সন্ত্রাস ইস্যুতে রেখেছেন বড়সড় বার্তা।
চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে ছিল অজিত ডোভালের বৈঠক। সেখানে তিনি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ওপর জোরালো বার্তা দেন। উল্লেখ্য, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইতে মে মাসেই পাকিস্তাের ৯ জঙ্গি ঘাঁটি টার্গে করে তা গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় সেনার অপারেশন সিঁদুর।
এদিকে, চিনে সদ্য আয়োজিত হয়েছিল সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন বা এসসিওর আওতায় থাকা দেশের উচ্চ পদস্থ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সম্মেলন। মনে করা হয় এই সম্মেলন, আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়ে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ সমারোহ। সেই সম্মেলনে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার যোগদান নিয়ে সদ্য বিদেশমন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়েছে,' এনএসএ এই অঞ্চলে সামগ্রিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য সকল ধরণের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দিয়েছেন।' মনে করা হচ্ছে, চিনের মাটিতে দাঁড়িয়ে অজিত ডোভালের এই বার্তা, কার্যত পরোক্ষে বেজিংয়ের ওপর দিল্লির চাপ বাড়ানো উদ্যোগ। যাতে চিন, তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু পাকিস্তানের ওপর সন্ত্রাস নিয়ে চাপ বাড়াতে পারে।
( সেন্ট মার্টিন নিয়ে এক ‘মাস্টারপ্ল্যান’র ভাবনায় ইউনুস সরকার! উপদেষ্টা বললেন…)
এছাড়াও ভারত-চিনের সম্পর্ক নিয়েও দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ভারতে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত জু ফেইহং এর মতে, ওয়াং উল্লেখ করেছেন, যে চিন-ভারত সম্পর্কে কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে এবং উভয় পক্ষের যোগাযোগ আরও বৃদ্ধি করা, পারস্পরিক বিশ্বাস তৈরি করা। তিনি বলেন, বাস্তব সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করা অপরিহার্য বলে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং মনে করেন। ফের একবার ড্রাগন ও হাতির নাচের প্রসঙ্গ তুলে চিনের রাষ্ট্রদূত বলেন,' ড্রাগন এবং হাতি যখন একসাথে নাচে, তখনই কেবল উভয় পক্ষের জন্যই লাভজনক ফলাফল হতে পারে। চিন এবং ভারতের উচিত সংবেদনশীল বিষয়গুলি সঠিকভাবে পরিচালনা করা এবং সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখা।' চিন বলছে,'ডোভাল বলেন যে ভারত বহুপাক্ষিক ক্ষেত্রে চিনের সাথে সহযোগিতা জোরদার করতে ইচ্ছুক এবং সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার) একটি সফল শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনে চিনের ভূমিকাকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে।' সাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের পরিস্থিতিতে চিনের রাষট্রদূত বলেন,' দুটি প্রধান এশীয় দেশ হিসেবে, ভারত এবং চিন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আরও বেশি অবদান রাখতে পারে।'