গ্রেটার নয়ডায় শ্বশুরবাড়িতে বধূ নির্যাতন ও আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিপিন ভাটি গুলিবিদ্ধ হলেন পুলিশ এনকাউন্টারে। পুলিশ জানিয়েছে, হেফাজত থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় বিপিনকে পায়ে গুলি করা হয়। পণের দাবিতে স্ত্রী নিকিকে খুন করার অভিযোগ বিপিনের বিরুদ্ধে। নিকির বোন কাঞ্চন পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। নিকির বাবা দাবি করেছিলেন, নিকির শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের যেন এনকাউন্টার করা হয়। সেই দাবির কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতেই এই এনকাউন্টার। গ্রেটার নয়ডার এডিসিপি সুধীর কুমার জানান যে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার অধীনে হত্যা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র এবং স্বেচ্ছায় আঘাত করার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিপিন হেফাজতে রয়েছে, এবং পলাতক আত্মীয়দের সন্ধানের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। (আরও পড়ুন: জীবন্ত জ্বলছেন নিকি! পণের দাবিতে খুনের ঘটনায় বিভীষিকাময় ভিডিয়ো ভাইরাল)
উল্লেখ্য, ৩৬ লক্ষ টাকা পণের দাবিতে গ্রেটার নয়ডার সিরসা গ্রামে ২৮ বছর বয়সি গৃহবধূ নিকিকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় আঙুল উঠেছে নিহত যুবতীর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের দিকে। এই ভয়ঙ্কর ঘটনার একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে যা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। জানা গিয়েছে দগ্ধ অবস্থায় নয়ডার ফর্টিস হাসপাতাল থেকে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার সময় নিকির মৃত্যু হয়েছে। তাঁর স্বামী বিপিন ভাটিকে (২৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিপিনের বাবা সত্যবীর ভাটি ও ভাই রোহিত ভাটি পলাতক। এফআইআরে নিকির শাশুড়ি দয়ার নামও রয়েছে। তদন্তকারীরা যত গভীরে যাচ্ছেন, ততই উঠে এসেছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য।
এই ভয়াবহতার সাক্ষী নিকির ছয় বছরের পুত্র। সে তাঁর বয়ানে বলেছে, 'মেরি মাম্মাকে উপার কুছ ডালা, ফির উনকো চাটা মারা, ফির লাইটার সে আগ লাগা দি' (তারা আমার মায়ের গায়ে কিছু ঢেলে দেয়, তাঁকে চড় মারে এবং লাইটার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়)। শিশুটির সাক্ষ্য অপরাধের নৃশংসতায় একটি বেদনাদায়ক মাত্রা যোগ করেছে। এদিকে নিকির বোন কাঞ্চন বলেন, 'তারা নিকির ঘাড়ে ও মাথায় আঘাত করে, অ্যাসিড নিক্ষেপ করে এবং আমাদের উপর অত্যাচার চালায়। মৃত্যুকে আত্মহত্যা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করা হয়।' কাঞ্চন নিজেই পুলিশ খুনের মামলা রুজু করেন। পরে বিপিনের একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্ট সামনে আসে, যেখানে বলা হয়, নিকি আত্মহত্যা করেছেন। তাতে লেখা, 'তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গেলে কেন? গোটা দুনিয়া আমাকে খুনি বলছে, নিকি।' শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিপিনকে ফের বিয়ে করাতে চেয়েছিলেন বলে কাঞ্চনের অভিযোগ। বিপিন যাতে ফের বিয়ে করতে পারেন, তার জন্যই নিকির শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে তাড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছেন যে বোনদের একসাথে মারধর করা হয়েছিল এবং চড় মারার পরে তাকে অজ্ঞান করে ফেলে রাখা হয়েছিল।