দিল্লিতে ফের হাড়হিম হত্যাকাণ্ড। দয়ালপুর এলাকায় নয় বছর বয়সি এক নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা রাজধানীতে। একটি বন্ধ ঘরে থাকা স্যুটকেস থেকে নাবালিকার দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে খবর। পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তের জন্য জিটিবি হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। পাশাপাশি, ধর্ষণ ও খুনের মামলাও রুজু করা হয়েছে ৷ তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
নির্যাতিতার বাবা জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর মেয়ে এলাকাতেই আত্মীয়ের বাড়িতে বরফ দিতে গিয়েছিল। অনেকক্ষণ পরেও সে ফিরে না আসায়, খোঁজাখুজি শুরু করেন পরিবারের সদস্যরা। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে কাকার বাড়িতে যায়নি। একজন জানান, ২০০ মিটার দূরে একটি বহুতলে শিশুটিকে যেতে দেখেছেন। ওই বহুতলে ছুটে যান নাবালিকার বাবা। সেখানে দোতলার একটি ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে একটি সুটকেসে মেয়েকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান তিনি। সেখান থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছিল। এরপরে নাবালিকাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।কিন্তু চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন-টানা ১০ ঘন্টা ডিউটি! অন্ধ্রপ্রদেশে শ্রম আইন বদলে বিতর্ক তুঙ্গে
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ওই নাবালিকার বাবা ভয়াবহ দৃশ্যের বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'আমি সেখানে গিয়ে দেখি দরজা বন্ধ। তালা ভাঙার পর, আমি একটি স্যুটকেস দেখতে পাই যা নড়ছিল। আমি সেটি খুলে ভেতরে আমার মেয়েকে দেখতে পাই। আমি তাকে কাছের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাই। কিন্তু তারা আমাকে আরও বড় হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে।নির্যাতিতার বাবা আরও জানান, তার মেয়ের রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।যার জেরে অচেতন হয়ে পড়েছিল। তাঁর কথায়, 'আমরা তাকে দ্রুত কাছের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাই, যেখানে ডাক্তাররা মৃত ঘোষণা করেন। পরীক্ষা পর তারা দেখতে পান যে মেয়েকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে।' ডিসিপি'র মতে, প্রাথমিক তদন্তে, ডাক্তাররা নির্যাতিতার মুখে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছেন ৷ তাকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে বলেও সন্দেহ রয়েছে চিকিৎসকদের। ক্রাইম এবং ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছে। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত এক বা একাধিক অভিযুক্তদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গ্রেফতার করার জন্য বেশ কয়েকটি দল গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও, ঘটনাস্থলের চারপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজও স্ক্যান করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-টানা ১০ ঘন্টা ডিউটি! অন্ধ্রপ্রদেশে শ্রম আইন বদলে বিতর্ক তুঙ্গে
এদিকে, ঘটনার পর এলাকার মানুষ ক্ষোভ ফুঁসছে। স্থানীয়রা রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। দোকানপাটও বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও তুলেছেন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় বিরাট পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। রয়েছে আধা সামরিক বাহিনীও।অন্যদিকে, এই ঘটনায় দিল্লির শাসক দল বিজেপিকে নিশানা করেছে বিরোধী আম আদমি পার্টি (আপ)। তাদের অভিযোগ, বিজেপির আমলে দিল্লির আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের প্রশ্ন, কোথায় মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা? কোথায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ? বিজেপি আমলে নাবালিকাও সুরক্ষিত নয়। দিল্লি মহিলারা সরকারের থেকে জবাব ও বিচার চাইছে।