এখন এই মহামারীর পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ মানুষই টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে অনলাইন মাধ্যমের ওপর নির্ভরশীল। আর এখানেই ফাঁদ পেতে রেখেছে প্রতারকরা। আপনার পকেট নিমেষে ফাঁকা করতে নিত্যনতুন ফন্দিফিকির আঁটছে সাইবার জালিয়াতরা। প্রযুক্তির মাধ্যমেই তারা লুঠে নিচ্ছে আমজনতাকে। এবার এই সাইবার জালিয়াতি রুখতে ব্যবস্থা নিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
সম্প্রতি একটি বিবৃতি প্রকাশ করে আর্থিক প্রতারণা রুখতে তারা নয়া হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে কেন্দ্র। পাশাপাশি এই ধরনের সাইবার অপরাধের অভিযোগ দায়ের করার জন্য নতুন পোর্টালও চালু করেছে।
আপাতত দেশের সাতটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে চালু হয়েছে। সেগুলি - হল, ছত্তিশগড়, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, তেলাঙ্গানা, উত্তরাখণ্ড ও উত্তরপ্রদেশ-সহ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে প্রয়োগ করা হচ্ছে। প্রায় ৩৫ শতাংশের বেশি মানুষ এই পরিষেবার আওতায় রয়েছেন। কেন্দ্রের জারি করা এই হেল্পলাইন নম্বরটি হল ১৫৫২৬০। এছাড়াও প্রতারিতরা অভিযোগ নথিভুক্ত করতে পারবেন http://cybercrime.Gov.In/-এ।
প্রথমে এই হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পুলিশ প্রতারণার শিকার হওয়া ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতারণায় লেনদেনের যাবতীয় তথ্য, অভিযোগ ও প্রতারিতের ব্যক্তিগত বিবরণ নথিভুক্ত করে নেবেন। এরপর অপরাধের গুরুত্ব বুঝে অভিযোগের একটি অনলাইন টিকিট জেনারেট করে দেওয়া হবে। সেই টিকিটগুলি সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক, ওয়ালেট, ব্যবসায়ীদের বিতরণ করা হবে। তবে এটি নির্ভর করবে প্রতারিত ব্যক্তির কোন ব্যাঙ্ক বা ওয়ালেট থেকে টাকা খোওয়া গিয়েছে তার উপর।
অন্যদিকে, অভিযোগকারীর কাছে অভিযোগের প্রাপ্তি স্বীকার নম্বর-সহ এসএমএস পাঠানো হবে। সেই অভিযোগের নম্বর সাইবার ক্রাইমের ওই পোর্টালে নথিভুক্ত করা হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক সরকারি পোর্টালের ড্যাশবোর্ডে অভিযোগের বিবরণ দেখতে পাবে। সেক্ষেত্রে জালিয়াতি করা টাকা যদি ব্যাঙ্কে থেকে যায়, তাহলে সেটাকে ব্লক করে দেওয়া হবে। প্রতারক সেই টাকা আর তুলতে পারবে না। আর যদি টাকা অন্য ব্যাঙ্কে স্থানান্তরিত হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে যে ব্যাঙ্কে টাকা গিয়েছে, সেখানে টিকিটটি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। প্রতারকদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এক ব্যাঙ্ক থেকে অন্য ব্যাঙ্কের এই প্রক্রিয়া চলতে থাকবে।
এই পদ্ধতিতে গত ২ মাসের মধ্যেই ১.৮৫ কোটি টাকারও বেশি জালিয়াতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে। ফলে সাইবার জালিয়াতির বড় দলগুলির পর্দা ফাঁস করা গিয়েছে। দিল্লি ও রাজস্থানে তদন্ত চলাকালীন বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করে ৭৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।