মার্কিন প্রশাসনের কর্মকাণ্ডে খাঁটি ভারতীয় 'টাচ'! সৌজন্যে এফবিআই-এর ডিরেক্টর পদে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মনোনীত প্রার্থী, ভারতীয় বংশোদ্ভূত কাশ্যপ প্যাটেল ওরফে কাশ প্যাটেল।
প্রথা মাফিক, সেনেট জুডিসিয়ারি কমিটির সামনে নিজের 'কনফারমেশন হিয়ারিং'-এ উপস্থিত হন কাশ। সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন কাশের পরিবারের সদস্যরাও। তাঁদের মধ্যে ছিলেন কাশের মা, বাবা ও বোন। তাঁদের সঙ্গে বাকি সকলের পরিচয় করিয়ে দেন তিনি। আর নিজের বাবা-মাকে এই প্রশাসনিক অনুষ্ঠানে স্বাগত জানাতে আর পাঁচজন গুজরাটির মতোই বলেন, 'জয় শ্রী কৃষ্ণা'!
কাশের এই 'জয় শ্রী কৃষ্ণা' অভিবাদন ইতিমধ্য়েই সোশাল মিডিয়ায় চাউর হয়ে গিয়েছে। যা নিয়ে নানা আলোচনাও চলছে। এই অনুষ্ঠানে কাশ ঠিক কী বলেন? তাঁকে বলতে শোনা যায়, 'আমি এই অনুষ্ঠানে আমার বাবাকে স্বাগত জানাতে চাই। এবং আমার মা, অঞ্জনাকে। ওঁরা আজ এখানেই বসে রয়েছেন। ওঁরা শুধুমাত্র এই অনুষ্ঠানের সাক্ষী থাকতেই ভারত থেকে এখানে এসেছেন। আমার বোনও এখানে রয়েছেন। তিনিও সাগর পেরিয়ে এসেছেন, শুধুমাত্র এখানে উপস্থিত থাকবেন বলে। আমার সঙ্গে থাকবেন বলে। আপনারা যে এখানে এসেছেন, এটাই আমার কাছে সবকিছু। জয় শ্রী কৃষ্ণা।'
এখানেই শেষ নয়। সোশাল মিডিয়ায় আরও একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। যার দৈর্ঘ্য মাত্র ১৫ সেকেন্ড। সেই ভিডিয়ো দেখা গিয়েছে, সেনেট জুডিসিয়ারি কমিটির সামনে নিজের 'কনফারমেশন হিয়ারিং'-এ আসার মুহূর্তেই পাশের সারিতে নিজের বাবা ও মাকেও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন কাশ।
ভারতীয় সংস্কৃতিতে যেকোনও শুভ কাজের আগে বড়দের পায়ে হাত প্রণাম করার এবং তাঁদের কাছ থেকে আশীর্বাদ গ্রহণের প্রথা রয়েছে। মার্কিন মুলুকেও সেই রীতি বা ঐতিহ্য ভোলেননি কাশ। তিনি সামনে এগিয়ে যেতে যেতেই নিজের বাবা-মায়ের পায়ে হাত দিয়ে তাঁদের প্রণাম করেন। যা দেখে ভারতীয় নেটিজেন এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিনিরা উচ্ছ্বসিত।
প্রসঙ্গত, এফবিআই-এর আগামী ডিরেক্টর হিসাবে কাশ প্যাটেল ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম পছন্দ হলেও ডেমোক্র্যাটরা মোটেও তাঁকে ওই পদে দেখতে চান না। মার্কিন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে, ডেমোক্র্যাটরা মূলত দু'টি ইস্যুতে কাশকে ঘায়েল করার চেষ্টা করছেন।
প্রথমত, এফবিআই ডিরেক্টর পদে যোগ দেওয়ার বিষয়ে কাশ প্যাটেলের যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন ডেমোক্র্য়াটরা। এবং দ্বিতীয়ত, তিনি যদি এফবিআই-এর ডিরেক্টর হন, তাহলে আদৌ মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা হোয়াইট হাউসের প্রভাব এড়িয়ে কাজ করতে পারবে কিনা, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা মহলে সংশয় দেখা দিয়েছে।
কারণ, কাশ প্য়াটেল ট্রাম্পের একনিষ্ঠ অনুগামী। নিন্দুকেরা বলছেন, এফবিআই-কে নিয়ন্ত্রণে রাখতেই কাশকে ডিরেক্টর পদে বসাতে চান ট্রাম্প। আর সেই বিষয়টিই কাশের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করতে চান ডেমোক্র্য়াটরা।