আবারও সমালোচনার মুখে বিমান সংস্থা ইন্ডিগো। এবার যাত্রী পরিষেবা নিয়ে উঠল প্রশ্ন। বিমান টেক অফের আগে শৌচালয়ে এক মহিলা যাত্রীকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে খোদ ইন্ডিগোর একজন ফার্স্ট অফিসার (সহ-পাইলট)-র বিরুদ্ধে। আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে বিমান সংস্থা ইন্ডিগো।
জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গত ৮ আগস্টের গভীর রাতে।লিঙ্কডইনে নিজের হেনস্থার ঘটনা জানিয়েছেন সেফগোল্ডের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রিয়া চ্যাটার্জি। তিনি জানান, 'বিমান টেক অফের আগে যখন আমি শৌচালয়ে ব্যবহার করছিলাম, তখন একজন ইন্ডিগো-র ফার্স্ট অফিসার আমার উপর আক্রমণ করেন।' রিয়া দাবি করেন, শৌচালয়ের দরজা লক করার পরে তিনি ধাক্কা শুনতে পান এবং তৎক্ষণাৎ তিনি সাড়াও দেন। কিন্তু দ্বিতীয়বার আবার দরজায় ধাক্কা দিলে, তিনি আরও জোরে উত্তর দেন।অভিযোগ, তিনি পুরো কথা বলার আগেই, শৌচালয়ের দরজাটি জোর করে খুলে ঢুকে পড়েন বিমানের ফাস্ট অফিসার। এরপর মহিলা যাত্রীকে দেখে হকচকিয়ে যান তিনি। তারপর 'ওহ' বলে ফের শৌচালয়ের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে চলে যান।
মুহূর্তের মধ্যে এই ঘটনায় হকচকিয়ে যান রিয়া চ্যাটার্জি। তিনি বলেন, 'তিনি নিজেকে নির্যাতনের শিকার বলে মনে হচ্ছিল। বিমানসেবিকারা এই ঘটনাটিকে ছোট করে দেখার চেষ্টা দেখায় বিষয়টি আরও খারাপ দিকে চলে যায়। বিমানসেবিকারা শুধু বলেছিলেন যে তারা অসুবিধার জন্য দুঃখিত।' পরে ওই যাত্রী ৯০ মিনিটের গোটা বিমান যাত্রা অস্বস্তিতে মধ্যে কাটিয়েছেন। বিমান অবতরণের পর, তিনি ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি বলেন, 'দুঃখের বিষয় হল, গোটা ঘটনা জানার পর ইন্ডিগো কর্পোরেট ভাষায় ভরা একটি ইমেল পাঠায়, যেখানে বলা হয়েছিল যে ফাস্ট অফিসার 'গভীর অনুশোচনা' প্রকাশ করেছে।' এরপরে বিমান সংস্থাটি তাঁকে টিকিটের টাকা ফেরত এবং ভাউচার অফার করে। রিয়া চ্যাটার্জি স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে তিনি ক্ষতিপূরণের জন্য পোস্টটি করেননি। তাঁর কথায়, 'এই পোস্টটি ইন্ডিগোর জন্য নয়। এটি আমার নেটওয়ার্কের সকলের জন্য, বিশেষ করে মহিলা এবং যাদের ছোট বাচ্চা আছে।'
ইন্ডিগো-র প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনায় প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে ইন্ডিগো। ঘটনাটিকে অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে উল্লেখ করে বিমান সংস্থা আশ্বস্ত করেছে যে ক্রুদের প্রশিক্ষণ জোরদার করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে ইন্ডিগো জানিয়েছে, 'মিসেস চ্যাটার্জি, আমাদের একজন ক্রুর অনিচ্ছাকৃত ভুলের কারণে আপনার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তার জন্য আমরা আবারও আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। আপনার অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয়েছে। ইন্ডিগোতে যাত্রীদের নিরাপত্তা, মর্যাদা এবং স্বাচ্ছন্দ্য আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আমরা আপনাকে আশ্বস্ত করছি যে ক্রুদের পরামর্শ এবং সংবেদনশীলতা প্রদান করা হয়েছে, এবং এই বিষয়টি বিবেচনা করে আমরা এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশিক্ষণ জোরদার করছি। আমাদের প্রতি আপনার আস্থা পুনরুদ্ধার করতে ইন্ডিগো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।' কিন্তু ইন্ডিগো ক্ষমা চাইলেও নেটিজেনরা তাতে সন্তুষ্ট হননি। অনেক নেটিজেন বিমানে তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছে। তারা বলেছেন, গোপনীয়তা অসুবিধা হিসাবে বিবেচনা করা উচিত নয়।