ভোটের রণদামামা বেজে গিয়েছে উত্তরপ্রদেশে। ৪০৩ আসনের মধ্যে বেশিরভাগ এলাকায় কোন পার্টির দখল থাকবে, তা নিয়ে ব্যস্ত নেতারা। হাইভোল্টেজ এই ভোটে জোরদার প্রচারে নেমেছে সমস্ত দল। সেখানে চলছে বক্তব্য আর পাল্টা বক্তব্যের ট্রেন্ড। ভোটের এই তুমুল ঝড়ের মাঝে কেমন আছে উত্তরপ্রদেশের হাথরাস? ২০২০ সালে ঘটে যাওয়া গণধর্ষণের ঘটনার পর কেমন আছে সেই নির্যাতিতার পরিবার?২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর। ১৯ বছরের এক দলিত তরুণীর ওপর ঘটে যায় নারকীয় যৌন অত্যাচার। উচ্চবর্ণের কয়েকজনের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হন তিনি। মুহূর্তে অগ্নিগর্ভ হয় হাথরাস। প্রতিবাদের ঝড় ওঠে দেশে। পর পর রাজনৈতিক দলের নেতারা ঘটনাস্থলে যেতে থাকেন। থাকে নিরাপত্তার কড়া বেষ্টনী। নির্যাতিতার বাড়ি ঘিরে থাকে পুলিশ ও প্রশাসনের প্রহরা। এরপর সময় বয়ে গিয়েছে। ছন্দে ফেরার চেষ্টা করেছে হাথরাস, তবে বুকে রয়ে গিয়েছে তরুণীর নৃশংস গণধর্ষণের ক্ষত। সব কিছুর মাঝে নির্যাতিতার পরিবার চাইছেন 'ন্যায় বিচার।' সামনেই উত্তরপ্রদেশের ভোট পর্বের তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ। সেখানে বিজেপির প্রচার জুড়ে রয়েছে উন্নয়নের বার্তা। আর বিরোধীরা হাতিয়ার করেছে হাথরাসকাণ্ডকে। আলিগড়ের জেএনএম হাসপাতাল থেকে পরে নয়া দিল্লির সফদরজং হাসপাতাল। বিভিন্ন জায়গায় নির্যাতনের শিকার প্রবল অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে ঘুরেও শেষ রক্ষা হয়নি। ধর্ষণের শিকার হয়ে ২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মারা গিয়েছিলেন তরুণী।যাঁর মৃত্যুর পরই ৪ জন অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়। তার মাঝেই ন্যায় বিচারের আশায় দিন গুনছে পরিবার। নির্যাতিতার ভাই বলছেন, 'কিছুই পাল্টায়নি। ঘটনার পর বহু জন এসেছিলেন। রাজনৈতিক নেতারাও এসেছিলেন, তবে গত একবছরে কোনও রাজনৈতিক নেতা আসেননি।'ভোট আসে, ভোট যায়। আর ভোটদাতারা থেকে যান একদিকে। হাথরাসে নির্যাতিতার ভাই বলছেন, 'আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, বাড়ির বাইরে রয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। আমি আর আমার ভাই বাড়িতেই থাকি, পরিবারের নিরাপত্তার কারণে।' গ্রামের বাসিন্দা করুণেশ দিক্ষীত বলছেন,'নির্যাতিতার সম্প্রদায়ের মানুষ শাসকদলের ওপর ক্ষুব্ধ সম্ভবত তাঁদের ভোট এবার অন্যদিকে যেতে পারে।' নির্যাতিতার ভাই বলছেন, 'বিধানসভা ভোটের জন্য রাজনৈতিক দলগুলি আমাদের ঘটনা তুলে ধরছে। আমরা ধন্যবাদ জানাই সেই নেতাদের যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই বিরোধী শিবিরের, আমাদের ঘটনার কথা বলার জন্য। তবে এসব সরে যাবে যখনই ভোট পার হয়ে যাবে।' উত্তরপ্রদেশের ভোটে আগরা থেকে আলিগড়ের মিছিলে বারবার উঠেছে হাথরাসের প্রসঙ্গ। বিরোধীরা তুলেছে সুর। এদিকে, রাজ্যসরকার নির্যাতিতার পরিবারকে সরকারি চাকরি, নিজেদের পছন্দের বাড়ি ও ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে মামলার শুনানিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে নির্যাতিতার ভাই বলছে, ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ছাড়া আর কোনও প্রতিশ্রুতিই পালিত হয়নি।