জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২৬ জনকে হত্যা করার পর পাকিস্তানের সেফ হাউসে পালিয়ে গিয়েছে হামলাকারী জঙ্গিরা।ডিজিটাল তথ্যপ্রমাণে এমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। মঙ্গলবার দুপুরে পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছে নিরীহ পর্যটকদের। যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে টার্গেট করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। (আরও পড়ুন: আতঙ্কে যুদ্ধের প্রস্তুতি পাকিস্তানের? চলছে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা, সতর্ক ভারতে)
আরও পড়ুন-Rajnath Singh: শীঘ্রই পহেলগাঁও হামলার যোগ্য জবাব দেওয়া হবে, কাউকে রেহাই নয়, হুংকার রাজনাথের
এই হামলার দায় নিয়েছে লস্করের ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফোর্স’(টিআরএফ)। ফরেন্সিক বিশ্লেষণ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের ভিত্তিতেও জানা গেছে, ৫ হামলাকারী একে রাইফেল এবং অত্যাধুনিক যন্ত্র-সহ স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিয়ে পর্যটকদের উপর হামলা চালায়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সেনার উর্দিও পরেছিল। তারা বাইরে থেকে নানা রকমের সাহায্য পেয়েছিল বলে দাবি। তদন্ত প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিক বলেন,‘পহেলগাঁওয়ে হামলা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বুঝেশুনে, পরিকল্পনা করে, সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণে আগ্নেয়াস্ত্র এনে এই হামলা চালানো হয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্যে পাওয়া গেছে পাকিস্তানের অপারেটিভদের সঙ্গে সরাসরি যোগ পাওয়া গেছে। ডিজিটাল তথ্যপ্রমাণ বলছে, হামলার পর পাকিস্তানের মুজফ্ফরাবাদ এবং করাচির সেফ হাউসে আশ্রয় নিয়েছে জঙ্গিরা। যেগুলি অতীতে ভারতে লস্করের বড় হামলার মূল কেন্দ্র ছিল।আর যা পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং আইএসআই নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে তত্ত্বাবধান করে।'
আরও পড়ুন: পহেলগাঁওয়ে হামলা খবর কখন পায় থানা? কেন ধরা পড়েনি জঙ্গিরা? FIR-এ মিলল যে তথ্য…
তদন্ত প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত আরেক আধিকারিক বলেন,'গত বছরের ডিসেম্বর এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী এলওসি এবং আন্তর্জাতিক সীমান্ত (আইবি) থেকে ভারতে অত্যন্ত দক্ষ লস্কর এবং জইশ-ই-মোহাম্মদ জঙ্গিদের অনুপ্রবেশের জন্য সক্রিয়ভাবে সহায়তা করছে বলে খবর ছিল।' সেই সূত্র ধরেই অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসবাদীদের এবং তাদের সহায়তাকারীদের খুঁজে বের করার জন্য জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি জায়গায় ব্যাপক তল্লাশি চালিয়েছিল।সন্দেহ করা হচ্ছে যে ভারতে প্রবেশের পর, এই সন্ত্রাসবাদীদের স্থানীয় কর্মীরা খাবার, আশ্রয় এবং অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছিল।মার্চ মাসে এনআইএ এক বিবৃতিতে বলেছিল, সন্ত্রাসবাদীরা কাঠুয়া, উধমপুর, ডোডা, কিস্তোয়ার, রিয়াসি, রাজৌরি, পুঞ্চের মতো জেলাগুলিতে এবং কাশ্মীর উপত্যকায় প্রবেশ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ফের রক্তাক্ত জম্মু ও কাশ্মীর, দেশের জন্যে সর্বোচ্চ ত্যাগ ভারতীয় সেনা জওয়ানের
এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, 'বর্তমানে উপত্যকায় প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ জন উচ্চ প্রশিক্ষিত বিদেশী সন্ত্রাসবাদী রয়েছে।' দ্বিতীয় তদন্তকারী অফিসারের মতে, পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই সন্ত্রাসীবাদীদের তাদের অফলাইন সংস্করণে আলপাইন কোয়েস্ট অ্যাপ দিয়ে সজ্জিত করেছে; এটি একটি নেভিগেশন অ্যাপ যা প্রায়শই পেশাদার ট্রেকাররা ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, 'তথ্য বলছে যে আইএসআই এই অ্যাপের মাধ্যমে অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসবাদীদের ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প, পুলিশ কনভয় চলাচল এবং ব্যারিকেডের বিবরণ সরবরাহ করছে।এছাড়াও এনক্রিপ্ট করা রেডিও কমিউনিকেশন ডিভাইসও ব্যবহার করছে যার সার্ভার পাকিস্তানে রয়েছে।'