শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই ভারত-বিরোধী স্লোগান তুলেছে বাংলাদেশ।বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনা আধিকারিক থেকে রাজনীতিক কখনও সেভেন-সিস্টার্স দখল , কখনও চিকেন নেক কেটে নেওয়ার হুঙ্কার দিয়েছেন।এদিকে, পহেলগাঁওকাণ্ডের পর ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের মধ্যে ইসলামাবাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে চিন। এই আবহে এবার তে-মাথা এক হল।
বৃহস্পতিবার চিনের দক্ষিণ ইউনান প্রদেশের কুনমিংয়ে প্রথমবার চিন, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। চিনের উদ্যোগেই এক হয় তিন দেশ। বৈঠকে ছিলেন চিনের উপ-বিদেশমন্ত্রী সান ওয়েইডং, পাকিস্তানের অতিরিক্ত বিদেশ সচিব ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী এবং বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত বিদেশ সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক ।পাকিস্তানের বিদেশ সচিব আমনা বালুচ ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে আলোচনার প্রথম পর্যায়ে যোগ দেন। আর এই বৈঠকের পরই প্রশ্ন উঠছে, শুধু কি তিন দেশের মধ্যে সম্পর্ক পোক্ত করতেই এই বৈঠক, নাকি এর নেপথ্যে লুকিয়ে রয়েছে গভীর ষড়যন্ত্র? এর একমাস আগে ঠিক এই রকমই একটি বৈঠক হয়েছিল পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে ৷ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার একঘরে হওয়া ভারতের দুই প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার নয়া উদ্যোগ নিয়েছে চিন ৷
আরও পড়ুন-'সিন্ধু জল চুক্তি পুনর্বহাল হবে না,' পাকিস্তানকে শুনিয়ে রাখলেন শাহ! বললেন…
সূত্রের খবর, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, প্রযুক্তি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে একে অপরের হাত ধরা নিয়ে আলোচনা হয়েছে ওই বৈঠকে। ত্রিপাক্ষিক প্রক্রিয়ার শুরুটাই হয় একে অপরের ঢালাও প্রশংসার মাধ্যমে। ভবিষ্যতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে বেজিং, ঢাকা আর ইসলামাবাদ হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবে, তেমনটাই অঙ্গীকার করা হয়েছে আলোচনায়। পরে চিনের বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান উভয়ই চিনের 'ভাল প্রতিবেশী, ভাল বন্ধু'। তাই চিন, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগিতা তিনটি দেশের মানুষের সাধারণ স্বার্থে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই ত্রিপাক্ষিক সম্পর্ক তিনটি দেশের মানুষের জন্যই শান্তি, স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসবে। বেজিং আরও জানিয়েছে, বৈঠকে চিন-পাকিস্তান-বাংলাদেশ ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছে । আগামীতে এই আলোচনাকে বাস্তব রূপ দিতে বদ্ধপরিকর তারা।
আরও পড়ুন-'সিন্ধু জল চুক্তি পুনর্বহাল হবে না,' পাকিস্তানকে শুনিয়ে রাখলেন শাহ! বললেন…
বর্তমান পরিস্থিতিতে এই ত্রিপাক্ষিক বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কারণ একদিকে পহেলগাঁও হামলার পর ভারত সারা বিশ্বের কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো-টলারেন্স নীতি। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও কার্যত কোণঠাসা পাকিস্তান।এই আবহে গত বছর অগস্টে বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী প্রশাসনও ৫৩ বছর পর পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে ৷ আর সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে চিন। আর এই পরিস্থিতিতে চিনকে পাশে বুকে বল পেয়েছে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান।