মুম্বইতে ৯০ বছরের পুরোনো মন্দির ভেঙে দেওয়ার প্রতিবাদে মৌন মিছিল করেছেন জৈন সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার মানুষ। একই সঙ্গে গোটা দেশে জৈন চৈত্যালয়ে বিজেপির বুলডোজার নীতির তীব্র নিন্দা করা হয়। অবশেষে চাপে পড়ে শনিবার ওয়ার্ড অফিসার নবনাথ ঘাডগে পাতিলকে বদলি করা হয়েছে। তাঁর তত্ত্বাবধানে এই মন্দির ভাঙার অভিযান চালানো হয়েছিল। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশি হিন্দু নেতা নাকি খুন হননি, দাবি পুলিশের, তাহলে কীভাবে মারা গেলেন ভবেশ?)
আরও পড়ুন-Rahul Gandhi: 'তাঁর থেকে ইতিহাস শিখবেন না!' রাহুলের ভুল ধরে কটাক্ষ বিজেপির
মুম্বাইয়ের ভিলে পার্লেতে নেমিনাথ সমবায় আবাসন এলাকায় দিগম্বর জৈন মন্দির প্রায় ৯০ বছরের পুরনো। জৈন সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুদের অভিযোগ, হোটেল ব্যবসায়ীদের চাপে কাম্বলিওয়াড়ির জৈন মন্দির বৃহণ্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন ভেঙে দিয়েছে। ১৯৬২ সাল থেকে ওই স্থানে ধর্মীয় আচার পালনের কারণে আইন অনুযায়ী সেখানে তাঁদের স্বত্ত্ব তৈরি হয়। তা সত্ত্বেও বেআইনি অভিযোগ এনে, সেই চৈত্যালয় বা মন্দির ভেঙে ফেলা হল বলে অভিযোগ জৈন সম্প্রদায়ের। প্রতিবাদে শনিবার জৈন সম্প্রদায়ের মানুষেরা মৌন মিছিল করে বিক্ষোভ দেখান। মৌন মিছিলের অভিমুখ ছিল আন্ধেরি ইস্টে বৃহণ্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের প্রধান দফতর। অন্যদিকে 'হিন্দুস্তান টাইমস'কে ঘাডগে পাতিল বলেন, 'আমরা আদালতের নির্দেশ অনুসারে কাজ করেছি এবং সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছি।'
এদিকে ময়ূর জৈন নামে এক প্রতিবাদী বলেন, ১৫ এপ্রিল বিএমসি আসন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে একটি নোটিশ সাঁটিয়েছিল। কিন্তু তারা এর আগেও বেশ কয়েকবার তা করেছে এবং পরে কোনও পদক্ষেপ করেনি। তারা আমাদের জোর করে তুলে নিয়ে গেছে, বিগ্রহগুলি স্থানান্তরিত করার জন্য আমাদের সময় পর্যন্ত দেয়নি। আমরা তাদের অনুরোধ করেছিলাম এটি স্থগিত রাখতে। কারণ আমরা সরকারি ছুটি শেষ হওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম।' তিনি আরও বলেন, মন্দিরের ট্রাস্টিরা একই দিনে বম্বে হাইকোর্ট থেকে মন্দির ভাঙার উপর স্থগিতাদেশ পেয়েছিলেন, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।কোর্টের আদেশ সম্পর্কে কর্মকর্তাদের বলার পর ভাঙার কাজ বন্ধ করা হয়েছিল, কিন্তু শেষে কেবল একটি দেয়াল ভাঙায় বাকি ছিল।'
আরও পড়ুন: পাকিস্তানি হিন্দু মন্ত্রী খেয়াল দাসের ওপর হামলা,সেন প্রধানের বিদ্বেষ ছড়ানোর ফল?
এদিকে মন্দিরের পরিচালন সমিতির বক্তব্য, কর্পোরেশনের দাবি বিনোদনের জন্য মাঠের জমিতে এই মন্দির গড়া হয়েছে। আমরা নিম্ন আদালতে আবেদন জানাই। নিম্ন আদালত আবেদন খারিজ করলেও হাইকোর্টে আবেদন জানানোর মৌখিক অনুমতি দেয়। তার জন্য সময়ও দেয়। সময়সীমা ফুরানোর আগেই ভেঙে দেওয়া হল মন্দির। মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের এক সদস্য অনিল শাহ বলেছেন, ‘বিগ্রহের ওপর উঠে পড়ে কর্পোরেশনের লোকজন ভাঙচুর করেছে। পুঁথিপত্র বাইরে ছুঁড়ে ফেলেছে। এ কেবল প্রশাসনিক তৎপরতা নয়। এর পিছনে রয়েছে ধর্মীয় পবিত্রতা নষ্ট করার অভিসন্ধি।’ তিনি আরও জানান, 'আমরা আদালতে লড়াই চালিয়ে যাব। রামকৃষ্ণ হোটেলের মালিকদের নির্দেশে এই ভাঙচুর করা হয়েছে , যারা হাউজিং সোসাইটির প্রাঙ্গণে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে।' অন্যদিকে স্থানীয় বিধায়ক আলাভানি বলেন, 'ওয়ার্ড অফিসার ঘাডগে পাতিল সেই দিনই আসা আদালতের আদেশের জন্য অপেক্ষা করতে পারতেন। কিন্তু মজার বিষয় হল, পরে হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ জারি করেছিল, কিন্তু ততক্ষণে মন্দিরটি প্রায় ভাঙা সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল।'