'আগামী পাঁচ বছর আমিই কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকব।' সব জল্পনায় জল ঢেলে এমনটাই জানালেন খোদ সিদ্দারামাইয়া। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে টানাপোড়েন চলছে। ২০২৩ সালে বিজেপিকে উৎখাত করে কর্ণাটকে ক্ষমতায় এসেছিল কংগ্রেস। এরপর থেকেই দলীয় কোন্দলে নাজেহাল অবস্থা হাত শিবিরের।মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার হিসেবে সিদ্দারামাইয়ার পাশাপাশি উঠে আসেন ডিকে শিবকুমার। শেষপর্যন্ত সিদ্দারামাইয়াকে শাসনভার দেওয়া হলেও এত সহজে দ্বন্দ্ব মেটেনি। সরকারের অন্দরে সংঘাতপর্ব উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে।
এর মাঝে সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধেও ওঠে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। যা নিয়ে দলের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সিদ্দারামাইয়াকে সরিয়ে শিবকুমারকে সেই পদে বসানোর দাবি ওঠে। এমনকি কংগ্রেস বিধায়ক ইকবাল হুসেনকে বলতে শোনা যায়, ১০০ থেকে ১৩৮ জন বিধায়ক শিবকুমারকে সমর্থন করছেন।
পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব যদি মুখ্যমন্ত্রী না বদল করেন, তাহলে কর্ণাটকে হয়তো দল আর ক্ষমতায় ফিরবে না।এরপরেই পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঠে নামে কংগ্রেস হাইকমান্ড।তড়িঘড়ি কর্ণাটকে পৌঁছন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুই নেতার সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন। এরপর কংগ্রেস নেতা আরভি দেশপাণ্ডে জানান, কর্ণাটকের নেতৃত্বে কোনও ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে না। আগামী ৫ বছর মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাবেন সিদ্দারামাইয়া।
আরও পড়ুন-৩ বছর ফোন ছুঁয়ে দেখেননি! কোন মন্ত্রে ইউপিএসসি-তে সাফল্য পেলেন নেহা?
এই আবহে বুধবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেন, 'হ্যাঁ, আমিই আগামী পাঁচ বছর মুখ্যমন্ত্রী থাকব। আপনার মনে কোনও সন্দেহ আছে?' এর কিছুক্ষণ বাদেই সাংবাদিকদের উপ-মুখ্যমন্ত্রী শিবকুমার বলেন, 'আমার কী বা করার আছে? ওঁর পাশে দাঁড়াব এবং সমর্থন করব। হাইকমান্ড যা বলেছে আমাকে সেটাই করতে হবে।আমি এখন কোনও বিষয়ে আলোচনা করতে চাই না। লক্ষ লক্ষ কর্মী এই দলকে সমর্থন করছেন।'তিনি আরও বলেন, 'সবাই কঠোর পরিশ্রম করেছে। আমার মতো শত শত মানুষ কঠোর পরিশ্রম করেছে। আমি কি একা? লক্ষ-লক্ষ দলীয় কর্মী কঠোর পরিশ্রম করেছেন। আমাদের প্রথমে তাদের কথা ভাবতে হবে।' কর্ণাটকের উপমুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্যে শঙ্কিত রাজ্য কংগ্রেসের বহু নেতা। তাঁদের মতে, শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে সাময়িকভাবে ঝামেলা মিটলেও অচিরেই ফের দেখা দিতে পারে বিবাদ।
আরও পড়ুন-৩ বছর ফোন ছুঁয়ে দেখেননি! কোন মন্ত্রে ইউপিএসসি-তে সাফল্য পেলেন নেহা?
এর আগে কর্ণাটকে মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তন নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, 'কংগ্রেসের মধ্যে শৃঙ্খলা আছে। আমরা সব সময় হাইকমান্ডকে সম্মান করি। বিষয়টা হাইকমান্ডের উপর ছেড়ে দেওয়া ভালো।' প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে কর্ণাটকে বিধানসভা নির্বাচন হয়। তাতে জয়ী হয় কংগ্রেস। হাত শিবিরের ঝুলিতে যায় ১৩৫টি আসন। বিজেপি পায় ৬৬ আসন এবং জেডি(এস) পায় ১৯টি আসন। ২২৪ আসন বিশিষ্ট কর্ণাটকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য প্রয়োজন ছিল ১১৩টি আসন। কংগ্রেস একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে।