মার্কিন হামলায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইরানের ফোরদো পারমাণবিক কেন্দ্র। অবশেষে স্বীকার করে নিল তেহরান।ইরানের বিদেশমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাঘচি একটি সাক্ষাৎকারে এই কথা জানিয়েছেন।তবে প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি মানতে চায়নি ইরান।
সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আব্বাস আরাঘচি বলেন, 'ফোরদো পারমাণবিক কেন্দ্রে কী ঘটেছে, তা কেউ সঠিক জানে না। তা সত্ত্বেও, আমরা এখন পর্যন্ত যা জানি তা হল পরমাণু কেন্দ্রগুলি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।' তবে কী কী ক্ষতি হয়েছে, সেই নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি তিনি। তিনি আরও বলেন,'ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা বর্তমানে ওই কেন্দ্রগুলির মূল্যায়নের কাজ করছে। যার রিপোর্ট সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে।' আরাঘচি জোর দিয়ে বলেন, 'বোমা হামলার মাধ্যমে (শান্তিপূর্ণ ইউরেনিয়াম) সমৃদ্ধকরণের প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানকে মুছে ফেলা যায় না।' তাঁর কথায়, তেহরান সহজে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ থেকে পিছু হটবে না। তিনি দেশের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ‘জাতীয় গর্ব ও গৌরবের বিষয়’ বলে অভিহিত করেন।
আরও পড়ুন-প্রথম সন্তান জন্মানোর কয়েকদিন আগেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লেন জার্মানির যুবরাজ
তিনি আরও বলেন, ‘এই ১২ দিনের চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের সময় আমরা প্রমাণ করেছি যে, আমাদের নিজেদের রক্ষা করার সক্ষমতা রয়েছে। ভবিষ্যতেও যদি আমাদের বিরুদ্ধে কোন আগ্রাসন চালানো হয়, আমরা তা প্রতিহত করতে থাকব।’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন করে আলোচনা সম্পর্কে আরাঘচি বলেন, ‘আমার মনে হয় না, আলোচনা এত দ্রুত শুরু হবে। পুনরায় আলোচনায় বসার আগে আমাদের নিশ্চিত হতে হবে, কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হামলা চালানো থেকে বিরত থাকবে।’তিনি আরও যোগ করেন, 'এই সমস্ত বিষয় বিবেচনা করতে আমাদের আরও সময় প্রয়োজন।'
ইরানের বিদেশমন্ত্রীর এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করছেন, মার্কিন হামলার লক্ষ্যবস্তুগুলি ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস’ হয়ে গিয়েছে। তবে গোয়েন্দা আধিকারিকরা স্বীকার করেছেন যে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে করা হামলার ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির সম্পূর্ণ মূল্যায়ন করতে সময় লাগবে। পাশাপাশি গত সোমবার হোয়াইট হাউস নিশ্চিত করে যে, ১২ দিনের সংঘাত শেষে যুদ্ধবিরতির পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ এবং ইরানি কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা জারি রয়েছে।
আরও পড়ুন-প্রথম সন্তান জন্মানোর কয়েকদিন আগেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লেন জার্মানির যুবরাজ
গত ১৩ জুন ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হয়।আর সংঘর্ষের মধ্যে মেগা এন্ট্রি নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের ৩ পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এরপরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, মার্কিন সেনাবাহিনী ইরানের ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহানে অবস্থিত তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে ‘সফল ভাবে’ হামলা চালিয়েছে। তারপর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে যুদ্ধপরিস্থিতি। একাধিক দেশের মার্কিন সেনাঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালায় ইরানও। শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির পথে হেঁটেছে সবপক্ষ।