সেনা প্রধানই যখন বিদ্বেষের বীজ বপন করেন, তখন মন্ত্রী পদে থাকলেও পাকিস্তানে নিরাপদ নন হিন্দু। সম্প্রতি পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে হামলার শিকার হলেন হিন্দু মন্ত্রী খেয়াল দাস কোহিস্তানি। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের এক সেচ প্রকল্প নিয়ে বিরোধ চলছে সিন্ধু প্রদেশে। আন্দোলনকারীদের দাবি, এই সেচ প্রল্প বাস্তবায়িত হলে সিন্ধু নদীতে জল আরও কমে যাবে। আর এই দাবিতে মন্ত্রীর গাড়িতেই হামলা চালানো হয়। যদিও জানা গিয়েছে. মন্ত্রী এতে আহত হননি। তবে প্রশ্ন উঠছে পাকিস্তানে সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে। যেখানে মন্ত্রী পদে থাকা সংখ্যালঘুর ওপর এমন হামলা হয়, সেখানে সাধারণ মানুষ কী অবস্থায় আছে? (আরও পড়ুন: বাংলাদেশি হিন্দু নেতা নাকি খুন হননি, দাবি পুলিশের, তাহলে কীভাবে মারা গেলেন ভবেশ?)
আরও পড়ুন: তলোয়ার হাতে ভারতে আসার বিমানে উঠল জেডি ভান্সের সন্তানরা, দেখুন কিউট ভিডিয়ো
এই হামলাটি হয়েছিল সিন্ধু প্রদেশের থাট্টা জেলায়। প্রসঙ্গত, সিন্ধু প্রদেশে এখনও উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় হিন্দুদের বাস আছে। তবে তাঁদের ওপর প্রতিনিয়ত অকথ্য অত্যাচার ও হামলার ঘটনা ঘটে থাকে বলে অভিযোগ। এদিকে খেয়াল দাস কোহিস্তানির ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সিন্ধু প্রেদেশের মুখ্যমন্ত্রী সৈয়দ মুরাদ আলি। সিন্ধু প্রদেশের হায়দরাবাদ অঞ্চলের আইজিপিকে এই হামলার ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এদিকে খেয়াল দাসের ওপর হামলা নিয়ে তথ্য চেয়েছেন পাকিস্তার ফেডারেল তথ্যমন্ত্রী আত্তা তরার। এদিকে এই হামলাকে 'অগ্রহণযোগ্য' আখ্যা দিয়ে এর নিন্দা করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। উল্লেখ্য, খেয়াল দাস ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো পিএমএল-এনের টিকিটে জিতে সংসদে গিয়েছিলেন। এরপর ২০২৪ সালের নির্বাচনে ফের তিনি জয়ী হন এবং তাঁরা রাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়। (আরও পড়ুন: গেলেন তৃণমূলের সাংসদ-বিধায়করা, বন্ধ হল মুর্শিদাবাদের ঘরছাড়াদের আশ্রয় শিবির)
দক্ষিণ পঞ্জাবে চোলিস্তান মরুভূমি অঞ্চলকে সবুজ করে তোলার জন্যে ছ'টি খাল কাটার পরিকল্পনা করেছে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার। তবে এই নিয়ে বিরোধ রয়েছে সিন্ধু প্রদেশের মানুষজনের মধ্যে। বিভিন্ন দল এবং স্থানীয়দের দাবি, এই খালের ফলে সিন্ধু প্রদেশে জলের সংকট দেখা দেবে। এদিকে এই বিরোধের জেরে হিন্দু মন্ত্রীর ওপর হামলা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, পাক সেনা প্রধানের বিদ্বেষপূর্ণ ভাষণই কি সাহস জুগিয়েছে সাধারণ পাকিস্তানিকে?
রাষ্ট্রসংঘে গিয়ে বারংবার কাশ্মীর এবং ভারতীয় সংখ্যালঘুদের নিয়ে 'ন্যাকা কান্না' কাঁদে পাকিস্তান। তবে নিজেদের দেশেই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না তারা। শুধু তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রেই প্রশাসনই সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কাজ করে। এহেন পাকিস্তানের সেনা প্রধান জেনারেল অসিম মুনির সম্প্রতি বলেছিলেন, 'আনপাদের সন্তানদের এটা শেখাবেন যাতে তারা পাকিস্তানের ইতিহাস ভুলে না যায়। আমাদের পূর্বপুরুষরা ভাবতেন যে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা হিন্দুদের থেকে আলাদা। আমাদের ধর্ম আলাদা, আমাদের রীতিনীতি আলাদা... আমাদের ঐতিহ্য আলাদা, আমাদের চিন্তাভাবনা আলাদা, আমাদের লক্ষ্য আলাদা, এটাই ছিল দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তি। আমরা দুটি জাতি, আমরা এক জাতি নই। আমরা এই দেশ তৈরি করার জন্যে অনেক আত্মত্যাগ করেছি। এবং আমরা জানি কীভাবে পাকিস্তানকে রক্ষা করতে হবে। তাই নিজের পরবর্তী প্রজন্মকে পাকিস্তানের ইতিাস বলতে ভুলবেন না। যাতে পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের নাড়ির টান বজায় থাকে। ইতিহাসে মাত্র দু'টি দেশ 'কালমা'র ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে। প্রথমটি হল - রিয়াসতে তৈবা। আজ যা মদিনা। আর দ্বিতীয়টি হল এই পাকিস্তান। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ, অর্থাৎ - আল্লাহ ছাড়া আর কোনও উপাস্য নেই এবং হজরত মহম্মদ আল্লাহর দূত।'