বাংলাদেশি মিডিয়াতে তাঁর পরিবারই দাবি করেছিল অপহরণ ও খুনের কথা। সেই ভবেশ চন্দ্র রায়ের মৃত্যু নিয়ে এবার বড় দাবি সেই দেশের পুলিশের। কালের কণ্ঠের রিপোর্ট অনুযায়ী, দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মারুফাত হোসেন দাবি করেছেন, ভবেশকে খুন করা হয়নি। তাঁর শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্নই নাকি দেখা যায়নি। এদিকে তাঁকে অপহরণ করা হয়নি বলেও পুলিশ দাবি করে। পুলিশ কর্তার দাবি, নিজের সঙ্গীদের সঙ্গে স্বেচ্ছায় বেরিয়েছিলেন ভবেশ। তাহলে ভবেশের মৃত্যু কীভাবে হল? পুলিশ দাবি করছে, অসুস্থতার কারণেই নাকি মৃত্যু হয়েছে ভবেশের। যদিও পরিবারের দাবি ছিল অন্য। (আরও পড়ুন: গেলেন তৃণমূলের সাংসদ-বিধায়করা, বন্ধ হল মুর্শিদাবাদের ঘরছাড়াদের আশ্রয় শিবির)
আরও পড়ুন: দলের সভাপতির কথা অমান্য করে বিস্ফোরক অগ্নিমিত্রা পাল, বিজেপি বিধায়ক বললেন...
উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে ৩৩০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে দিনাজপুরের বাসুদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন নিহত ভবেশ। বছর ৫৮-র প্রৌঢ় গত ১৭ এপ্রিল মারা গিয়েছিলেন। সেদিন রাত ১০টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ও মৃতের পরিবারকে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টার জানিয়েছিল, ১৭ এপ্রিল বিকেলে ভবেশকে বাড়ি থেকে অপহরণ করেছিল দুষ্কৃতীরা। ভবেশের রায়ের স্ত্রী সান্ত্বনা জানান, ১৭ এপ্রিল বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ একটি ফোন আসে এবং অপরাধীরা নিশ্চিত করে যে তিনি বাড়িতেই আছেন কি না। জানা গিয়েছে, সেই ফোনের প্রায় ৩০ মিনিট পর দু'টি মোটরসাইকেলে করে চারজন লোক এসে ভবেশকে তাঁর বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপরে ভবেশ রায়কে নরবাড়ি গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নাকি উন্মত্ত মৌলবাদী জনতা তাঁকে নির্মমভাবে মারধর করে। পরে ভবেশকে উদ্ধার করে দিনাজপুর হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পর তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
জানা যায়, ভবেশ রায় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি ও স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। এদিকে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের জারি করা বিবৃতিতে এই নিয়ে বলা হয়, 'বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘু নেতা শ্রী ভবেশ চন্দ্র রায়ের অপহরণ এবং নৃশংস হত্যাকাণ্ড আমাদের মর্মাহত করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর পদ্ধতিগত নির্যাতনের আরও একটি নমুনা এই হত্যাকাণ্ড। যদিও পূর্ববর্তী এই ধরনের ঘটনার অপরাধীরা দায়মুক্তির সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং আবারও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি যে তারা যেন অজুহাত না দেখিয়ে বা ভেদাভেদ না করে হিন্দু সহ সকল সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার দায়িত্ব পালন করে।' তবে এখন বাংলাদেশ পুলিশ এই ঘটনা নিয়ে পুরো ভিন্ন দাবি করছে।