কালীগঞ্জে তৃণমূলের বিজয়োল্লাস থেকে ছোড়া বোমায় নিহত তামান্না খাতুনের মৃত্যুর সুবিচারের দাবিতে কলকাতা আসছেন তাঁর বাবা মা। কলকাতায় আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের পরামর্শ নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার পলাসি থেকে রওনা দেওয়ার সময় তামান্নার মা সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, পুলিশের ওপরে আমাদের ভরসা আছে। কিন্তু পুলিশকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
গত ২৩ জুন ছিল কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনের ভোটগণনা। গণনার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিপুল ভোটে এগিয়ে যান তৃণমূলপ্রার্থী আলিফা আহমেদ। এর পরই কালীগঞ্জ বিধানসভার অন্তর্গত মোলান্দি গ্রামে বিজয়োৎসব শুরু করে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। মুহুর্মুহু বোমা ছুড়তে থাকে তারা। বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় তামান্না খাতুন নামে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীর। ছোট্ট তামান্নার বুকে এসে বোমা লাগে। ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায় তার বুক ও গলা।
মা - বাবার একমাত্র সন্তান ছিল তামান্না। এর আগে চারটি সন্তানকে হারিয়ে তামান্নাকে বড় করছিলেন দম্পতি। মেয়েকে একটু ভালো করে বড় করতে ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজে গিয়েছিলেন তার বাবা। সেই মেয়ের মৃত্যুর পর বেঁচে থাকার কারণ খুঁজতে হচ্ছে সন্তানহারা দম্পতিকে।
তামান্না খুনে তাদেরই প্রতিবেশীসহ মোট ১৯ জনের নামে FIR হয়। তার মধ্যে এখনও ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তামান্নার মায়ের অভিযোগ, FIRএ নাম থাকা অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের প্রাণের হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না।
প্রথম থেকেই পুলিশি তদন্তে আস্থা রাখলেও ১১ দিনের মাথায় অবশেষে সুবিচারের দাবিতে আইনের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন তাঁরা। এদিন কলকাতার উদ্দেশে যাত্রা করার আগে তামান্নার মা বলেন, আমাদের মেয়ের সুবিচার চাই। মেয়েকে তো ফিরে পাব না। কিন্তু ওর জন্য সুবিচারের লড়াই জারি থাকবে। পুলিশের ওপর আস্থা আছে। কিন্তু পুলিশকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা কলকাতায় গিয়ে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের আইনি পরামর্শ নেব। ওনার পরামর্শ অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব।