ভারতের পর এবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের রোষানলে চিন। রাশিয়া তেল কেনার অপরাধে এবার শি জিনপিংয়ের দেশকে শাস্তি দিতে চলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। তাঁর মতে, ভারতের মতোই রুশ তেল কেনার শাস্তি এবার পেতে হবে বেজিংকেও।
ফক্স নিউজের এক সাক্ষাৎকারে জেডি ভ্যান্সকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, রাশিয়ান তেল কেনার কারণে ভারতের উপর যে ধরনের শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, চিনের ক্ষেত্রেও কি একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা। জবাবে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, 'প্রেসিডেন্ট বলেছেন তিনি বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন, তবে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। অবশ্য চিন বিষয়টি কিছুটা বেশ জটিল, কারণ আমাদের চিনের সঙ্গে সম্পর্ক অনেক অন্যান্য বিষয়ের উপর প্রভাব ফেলে, যার সঙ্গে রাশিয়ার পরিস্থিতির কোনও সম্পর্ক নেই। তাই প্রেসিডেন্ট তার বিকল্পগুলো পর্যালোচনা করছেন এবং যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।'
গত বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, ভারতের উপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানো হল। তাঁর কথায়, রাশিয়া থেকে ভারত এখনও তেল কেনা চালিয়ে যাচ্ছে। তার শাস্তিস্বরূপ বাড়তি কর বসানো হল ভারতীয় পণ্যের উপর। অর্থাৎ এবার ভারতীয় পণ্যের উপর মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এক্সিকিউটিভ অর্ডার সই করে ট্রাম্প জানান, ২১ দিন পর থেকে কার্যকর হবে ভারতের নয়া শুল্কহার। সেখানে স্পষ্ট লেখা হয়, ‘প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ভারত বর্তমানে রুশ তেল আমদানি করছে। তাই আমার মনে হয় ভারতের উপর আরও বেশি শুল্ক চাপানো দরকার।’ এরপরেই পাল্টা জবাবে ভারত জানায়, ‘অন্য বহু দেশ নিজেদের জাতীয় স্বার্থের কথা ভেবে একই কাজ করছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেবল ভারতের উপরেই অতিরিক্ত শুল্ক চাপাচ্ছে, এটা যথেষ্ট দুৰ্ভাগ্যজনক। মার্কিন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলতে চাই, এই সিদ্ধান্ত অন্যায্য, অযৌক্তিক এবং অন্যায়। নিজেদের জাতীয় স্বার্থকে সুরক্ষিত করতে সমস্ত রকম পদক্ষেপ করবে ভারত।'
শুল্ক দফতরের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে চিন, রাশিয়ার থেকে তেলের আমদানি ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি করেছে, যা মার্চের পর সর্বোচ্চ। যদিও ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের মোট আমদানি এখনও ৭.৭ শতাংশ কম। মার্কিন শুল্ক আরোপের হুমকির মাঝেই রাশিয়ার সঙ্গে তাদের জ্বালানি ব্যবসাকে চিন সমর্থন করেছে। ব্লুমবার্গ নিউজকে দেওয়া শুক্রবারের এক ব্রিফিংয়ে চিনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, 'বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে রাশিয়া-সহ, স্বাভাবিক অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও জ্বালানি সহযোগিতা চালানো চিনের জন্য বৈধ ও আইনসম্মত। আমরা জাতীয় স্বার্থ অনুযায়ী যৌক্তিক জ্বালানি নিরাপত্তা পদক্ষেপ গ্রহণ অব্যাহত রাখব।'