মেঘভাঙা বৃষ্টি ও বন্যায় লন্ডভন্ড হিমাচল প্রদেশ। মুষলধারে বৃষ্টি, বন্যা, ধসের জেরে রাজ্যের জেলায় জেলায় ধ্বংসযজ্ঞ চলছে। সেই সঙ্গে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এখনও পর্যন্ত ৭৮ জনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এসেছে। নিখোঁজ কমপক্ষে ৩৭ জন এবং আহত ১১৫ জন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৭০০ কোটি ছুঁই ছুঁই। সব মিলিয়ে নাজেহাল অবস্থা হিমাচলে। (আরও পড়ুন: পাক ISI গুপ্তচর জ্যোতিকে স্পন্সর করেছিল কেরলের বাম সরকার, জানা গেল RTI করে)
আরও পড়ুন: ভারতীয়দের সুখবর দিল এই মুসলিম দেশ, বড় সুযোগ পাবেন বাংলাদেশিরাও, জানুন বিশদে...
সূত্রের খবর, ২০ জুন বর্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে হিমাচল প্রদেশে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে বিভিন্ন দুর্যোগ, যেমন- ভূমিধস, আকস্মিক বন্যা এবং মেঘ ভাঙা বৃষ্টির কারণে। বাকি ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায়। মান্ডি জেলায় মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, ১৭ জন।রাজ্যে দুর্যোগে বেশি ক্ষতি হয়েছে মান্ডির। বহু রাস্তা ইতিমধ্যেই জলমগ্ন। হিমাচলের বেশ কিছু রাস্তাও ভূমিধসের কারণে বন্ধ। বিভিন্ন এলাকাতে বন্ধ বিদ্যুৎ পরিষেবা। ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।এমনকী হিমাচল সমবায় ব্যাঙ্কের একতলাও জলমগ্ন। স্থানীয় ব্যবসায়ী হরি মোহন বলেন যে ৮ হাজার জনসংখ্যার শহরের জন্য এটিই একমাত্র ব্যাঙ্ক।এরমধ্যে রাজ্যের দুটি জাতীয় সড়ক-সহ ২৪৩টি রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ২৬১টি জল প্রকল্প বন্ধ রয়েছে। (আরও পড়ুন: খুলছে 'মুখোশ'? ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সাংবাদিকদের হুমকি বাংলাদেশি হাসনাতের)
আরও পড়ুন: নাম না করে 'আমেরিকার নিন্দায় সামিল' মোদী, পালটা ভয় দেখালেন ট্রাম্প
এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ বর্তমানে রাজ্যে উদ্ধারকার্য চালাচ্ছে। রেশন কিট আকাশপথে পাঠানো হয়েছে। তৈরি কড়া হয়েছে ত্রাণ শিবির। তবে যোগাযোগ এবং বিধ্বস্ত এলাকায় রেশন কিট পৌঁছনোটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে সেনাবাহিনীর কাছে।তবে এখনই বিপদ কাটছে না হিমাচল প্রদেশের।আবহাওয়া দফতরের তরফে ৮ ও ৯ জুলাই ভারী বৃষ্টি, বজ্রপাত, ঝড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে হিমাচলের বিভিন্ন জেলায়। সিরমাউর, কাংড়া, মান্ডিতে জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। এছাড়াও, সিমলা, সোলান, হামিরপুর, বিলাসপুর, উনা, কুলু এবং চাম্বায় জারি হয়ছে কমলা সতর্কতা। (আরও পড়ুন: ট্রাম্পের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে 'অপমান' মাস্কের, এক্স-এর মালিক বললেন…)
বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ড
শুধু হিমাচল নয়, প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ডও। বিভিন্ন জেলায় জারি করা হয়েছে বিশেষ সতর্কতা। আবহাওয়া দফতরের তরফে তেহরি, উত্তরকাশী, রুদ্রপ্রয়াগ এবং চামোলিতে ভূমিধসের সতর্কতা জারি হয়েছে। জানানো হয়েছে, এই চার জেলায় সোমবার ও মঙ্গলবার অতি ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশাসনের তরফে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে কোনও পরিস্থিতিতে প্রস্তুত থাকার জন্য।এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের তরফে আগে থেকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী এবং পুলিশকে। এছাড়াও জরুরি পরিস্থিতিতে মোবাইল ফোন বন্ধ না রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীকে।
হিমাচল ও উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যেই নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে যানবাহন চলাচলে। পাশাপাশি ধসের জেরে যে কোনও অবরুদ্ধ রাস্তা থেকে মাটি, বালি সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে স্থানীয় থানা এবং ফাঁড়িগুলিকে।বৃষ্টিপাত এবং ভূমিধসে আটকে পড়া এলাকার লোকজন ও পর্যটকদের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। পড়ুয়াদের সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যেতে না করা হয়েছে।