বর্তমান সময়ে প্রিইমপ্লান্টেশন জেনেটিক টেস্টিং (PGT) অ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজিতে একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইভিএফ-এর মাধ্যমে অনেকেই এখন সন্তানধারণ করেন। যে দম্পতিদের বারবার আইভিএফ ব্যর্থ হয়, বা যাঁরা বেশি বয়সে মা হতে চান, তাঁদের ক্ষেত্রে বেশ কিছু ঝুঁকি থেকে যায়। কলকাতার বিড়লা ফার্টিলিটি ও আইভিএফ-এর ফার্টিলিটি স্পেশালিস্ট চিকিৎসক সুগত মিশ্র HT বাংলাকে জানালেন, আইভিএফ-এর একটি অংশ পিজিটি। কিন্তু এটি নিয়ে নানা ভুল ধারণা বা মিথ প্রচলিত রয়েছে। এই ধারণাগুলি যত দ্রুত সম্ভব ভেঙে ফেলা উচিত।
PGT নিয়ে প্রচলিত তিনটি মিথ
মিথ ১: PGT ১০০% সফল আইভিএফ দিতে সাহায্য করে
এটি PGT সম্পর্কে সবচেয়ে সাধারণ ভুল ধারণাগুলির মধ্যে একটি। PGT ক্রোমোজোমালি স্বাভাবিক ভ্রূণ নির্বাচনের সম্ভাবনা বাড়ায়। তবে এটি সাফল্যের নিশ্চয়তা দিতে পারে না। ভ্রুণরোপণ (implantation), গর্ভাবস্থা এবং জীবন্ত শিশুর জন্ম এখনও জরায়ুর স্বাস্থ্য, ভ্রূণের গুণমান এবং ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার মতো কারণের উপর নির্ভর করে। PGT সন্তানধারণের অনিশ্চয়তা কমাতে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু সম্পূর্ণরূপে দূর করতে পারে না।
মিথ ২: PGT শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণে সাহায্য করে
এই দাবি একেবারেই ভুল। ভারতে জন্মের আগে শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ অবৈধ এবং PC-PNDT আইনের অধীনে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। PGT-এর ক্লিনিকাল লক্ষ্য লিঙ্গ নির্ধারণ করা নয়। বরং জিনগত ত্রুটিযুক্ত ভ্রূণ চিহ্নিত করা, যেমন ডাউন সিনড্রোম বা থ্যালাসেমিয়া। এটি একটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, কোনও ডিজাইনার টুল নয়। তাই ডিজাইনার বেবি হওয়ার সম্ভাবনাও নেই।
মিথ ৩: PGT ভ্রূণের জন্য বিপজ্জনক
অনেক দম্পতি চিন্তিত থাকেন, যে ভ্রূণ থেকে কোষ অপসারণ বিপজ্জনক হতে পারে। বাস্তবে, এই প্রক্রিয়াটি প্রশিক্ষিত ভ্রূণ বিজ্ঞানীরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করেন। সাধারণত ভ্রুণ বিকাশের তৃতীয় বা পঞ্চম দিনে। মাত্র কয়েকটি কোষ শুধুমাত্র বাইরের স্তর থেকে নেওয়া হয়। যা পরে প্ল্যাসেন্টা তৈরি করে, ভ্রূণ নয়।
শেষ পর্যন্ত, PGT কোনও ‘ভালো’ শিশু জন্ম দেওয়ার জন্য নয়, বরং শিশুকে একটি সুস্থ রাখার জন্য জরুরি। যে দম্পতিরা আইভিএফ-এর মানসিক এবং শারীরিক চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, তাদের জন্য এটি অনিশ্চয়তা কমাতে একটি সুযোগ দেয়।