গঙ্গা কোনও সাধারণ নদী নয়, বরং কোটি কোটি ভারতের মানুষের পবিত্রতা এবং বিশ্বাসের প্রতীক। হিন্দু ধর্মে গঙ্গাকে মায়ের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে এবং এর জলকে অমৃতের সাথে তুলনা করা হয়েছে। ভারতের অনেক জায়গা দিয়ে গঙ্গা প্রবাহিত হয়, তবে হরিদ্বারের গঙ্গা জলের গুরুত্ব সবচেয়ে বিশেষ। পুজো হোক বা যেকোনো ধর্মীয় কাজ, বেশিরভাগ মানুষ হরিদ্বার থেকে গঙ্গা জল আনেন। হরিদ্বার ছাড়াও, মানুষ গোমুখ, ভাগীরথী, গড় গঙ্গা এবং প্রয়াগরাজ থেকেও গঙ্গা জল বাড়িতে আনেন। কিন্তু যখন শিবের নগরী কাশীর কথা আসে, তখন এখান থেকে গঙ্গা জল বাড়িতে আনা নিষিদ্ধ বলে মনে করা হয়।কেন কাশী থেকে গঙ্গা জল আনা হয় না? এর পিছনে একটি খুব আকর্ষণীয় কারণ আছে।
হরিদ্বারের গঙ্গা জলের গুরুত্ব
হরিদ্বারকে গঙ্গার প্রধান তীর্থস্থানগুলির মধ্যে গণ্য করা হয়। এটি সেই স্থান যেখানে গঙ্গা পাহাড় ছেড়ে সমভূমিতে প্রবেশ করে। বিশ্বাস করা হয়, এখানকার গঙ্গা জল সম্পূর্ণ পবিত্র এবং বিশুদ্ধ। এই কারণে, এখান থেকে আনা গঙ্গা জল পুজো এবং ধর্মীয় উদ্দেশ্যে বিশেষ বলে বিবেচিত হয়। মানুষ হরিদ্বার, গোমুখ, ভাগীরথী এবং গড়গঙ্গা থেকে গঙ্গাজল এনে তাদের বাড়ির পুজো কক্ষে রাখে এবং ধর্মীয় কাজে ব্যবহার করে।
কাশী থেকে গঙ্গাজল বাড়িতে আনা কেন নিষিদ্ধ?
কাশী, যা বারাণসী নামেও পরিচিত, গঙ্গার তীরে অবস্থিত একটি প্রাচীন এবং আধ্যাত্মিক শহর। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, এখানে গঙ্গায় স্নান করলে মোক্ষ পাওয়া যায়, কিন্তু তবুও কাশী থেকে গঙ্গাজল বাড়িতে নিয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ। আসলে, কাশীকে মোক্ষের শহর বলা হয়। বিশ্বাস করা হয়, এখানে আসা প্রতিটি জীব এবং মানুষ জন্ম ও মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্তি পায়। এখানে চিতার ছাই গঙ্গাজলে নিমজ্জিত করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে, যদি আপনি এখান থেকে গঙ্গাজল এনে বাড়িতে আসেন এবং দুর্ঘটনাক্রমে মৃত ব্যক্তির ছাইয়ের কিছু অংশ এতে চলে আসে, তবে এটি মৃত্যু এবং পুনর্জন্মের চক্রকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। বলা হয়, এর ফলে আত্মা সম্পূর্ণ মোক্ষ পায় না। তাই, কাশী থেকে গঙ্গাজল আনা নিষিদ্ধ।
ধর্মীয় কারণ ছাড়াও, এই ঐতিহ্যের পিছনে একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিও রয়েছে। আসলে, কাশীতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের শেষকৃত্য করা হয়। শেষকৃত্যের পর তাদের দেহাবশেষ গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়। যদিও গঙ্গা নদী প্রাকৃতিকভাবে জল বিশুদ্ধ করার ক্ষমতা রাখে, কাশীর জলে এমন জীবাণু পাওয়া যায় যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। এই কারণে, সেখান থেকে গঙ্গার জল এনে বাড়িতে রাখা বা পান করা স্বাস্থ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক বলে বিবেচিত হয় না।
কাশীতে গঙ্গা স্নানের গুরুত্ব
কাশী থেকে গঙ্গার জল বাড়িতে না আনা হলেও, সেখানে গঙ্গায় স্নান করা অত্যন্ত শুভ বলে বিবেচিত হয়। বিশ্বাস করা হয় যে কাশীতে গঙ্গায় স্নান করলে ব্যক্তির সমস্ত পাপ ধুয়ে যায় এবং সে মোক্ষ লাভ করে। এই কারণে, প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ভক্ত কাশীতে আসেন এবং এখানে গঙ্গায় স্নান করে পুণ্য অর্জন করেন।
পাঠকদের প্রতি: প্রতিবেদনটি প্রাথমিক ভাবে অন্য ভাষায় প্রকাশিত। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির মাধ্যমে এটির বাংলা তরজমা করা হয়েছে। HT বাংলার তরফে চেষ্টা করা হয়েছে, বিষয়টির গুরুত্ব অনুযায়ী নির্ভুল ভাবে পরিবেশন করার। এর পরেও ভাষান্তরের ত্রুটি থাকলে, তা ক্ষমার্হ এবং পাঠকের মার্জনা প্রার্থনীয়।