কোভিড মহামারির গোড়াতেই চিনে জিরো কোভিড নীতি শুরু করেছিল সে দেশের সরকার। কিছু দিন আগে প্রবল প্রতিবাদে তা প্রত্যাহার করা হয়। তারপর থেকেই হু হু করে বাড়ছে মৃত্যুর হার। নিউইয়র্ক টাইমস সম্প্রতি তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ডিসেম্বর থেকে কোভিডে কমপক্ষে এক থেকে দেড় মিলিয়ন (অর্থাৎ ১০ লাখ থেকে ১৫ লাখ) মানুষ মারা গিয়েছেন। চিনের শশ্মানগুলিতে রীতিমতো ভিড় বেড়ে গিয়েছে গত কিছুদিনে।
একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মৃতদের ভিড়ে রীতিমতো উপচে পড়ছে শশ্মানগুলি। হাসপাতালগুলির ভিতরেও একই হাল। রোগীদের রীতিমতো বাড়ি ফেরত পাঠাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিনের সরকারি তথ্যে অবশ্য এমন দাবির কোনও ছাপ নেই। সেই পরিসংখ্যান আটকে রয়েছে ৮৩,১৫০ জনের হিসেবেই। প্রকৃতপক্ষে এই পরিসংখ্যান করোনা প্রকোপে ভোগা পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলির করোনামৃত্যুর তুলনায় অনেকটাই কম। এর ফলে বিশ্ব জুড়েই সন্দেহ ঘনিয়ে উঠেছে। আসল তথ্য লুকিয়ে যাচ্ছে চিন, এমনটাই দাবি উঠেছে নানা বিশেষজ্ঞমহলে।
অনেক গবেষকদের মতে, এত কম সংখ্যা হওয়ার কারণ শুধুমাত্র হাসপাতালের নথিভুক্ত রোগীদেরই গোনা হয়েছে। যারা মৃত্যুর আগে কোনও চিকিৎসাই পাননি, বাড়িতেই মারা গিয়েছেন, তাদের এই পরিসংখ্যানে জায়গা হয়নি। ফলে সংখ্যাটা অনেকটাই কম রয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমস এই পরিসংখ্যানকে সরসরি নস্যাৎ করে জানিয়েছে, আদতে করোনায় মৃতের সংখ্যা সরকারি পরিসংখ্যানের দ্বিগুণ! যে সংখ্যাটা বেমালুম চেপে যাচ্ছে চিন। কোভিডে মৃতের সংখ্যা বিভিন্ন বেসরকারি তথ্যপ্রমাণ থেকে গণনা করে বার করেছেন চারজন বিশেষজ্ঞ। তাদের চারজনই আলাদা আলাদা পদ্ধতিতে মৃতের সংখ্যা গণনা শুরু করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গিয়েছে, উত্তরটা সেই ১৫ লাখের কাছাকাছিই।
গত ডিসেম্বর থেকেই চিনের বিরুদ্ধে তথ্য বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছিল সারা বিশ্বে। সেই মর্মে চারজন বিশেষজ্ঞরা এই প্রকল্পে হাত দেন। চিনের কোভিড মৃত্যুর বাড়তে শুরু করলে একেকজন একেকরকম পদ্ধতি অবলম্বন করে গণনার কাজ শুরু করেন। কিন্তু গণনা শেষে দেখা যায়, সংখ্যাটা প্রায় ১৫ লাখ ছুঁয়েছে। তবে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে লেখা হয় সতর্কতাবাণীও। বলা হয়, এই প্রতিটি গণনাই নির্দিষ্ট কোনও পরিসংখ্যান ভিত্তিক নয়। বরং প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভর করেই নিজের গবেষণার ফলাফল জনিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক