তখন কোভিড কাল, সেই বিষাক্ত ২০২০র ২৯ এপ্রিল না ফেরার দেশে চলে যান বলি অভিনেতা ইরফান খান। তাঁর আকষ্মিক চলে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছিলেন তাঁর কাছের মানুষ ও অনুরাগীরা। ইরফানের চলে যাওয়ায় শূন্যতা তৈরি হয়েছিল স্ত্রী সুতপা সিকদারের জীবনেও। টাইমস অফ ইন্ডিয়া-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরফানের আধ্যাত্মিকতা, ব্যক্তিগত ভাবনা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন সুতপা।
সুতপা বলেন, তিনি মুসলিম না হয়েও রোজা রাখেন - যেজন্য তাঁর প্রয়াত স্বামীর শিক্ষাকেই দায়ী সুতপা। সুতপা বলেন, ইরফান বিশ্বাস করতেন রোজা রাখার জন্য, আল্লাহর সঙ্গে কথা বলার জন্য মুসলিম হতে হয় না। এগুলি সবই ব্যক্তিগত বিশ্বাস থেকে আসে।
সুতপা সিকদার বলেন, ইরফান উপবাস রাখতেন। যদিও পরে স্বাস্থ্যগত কারণে তাঁর পক্ষে শেষ ২ বছর উপবাস রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। সুতপা কথায়, ‘ইরফান একদিন হঠাৎই বললেন, আমি সপ্তাহে একদিন উপবাস রাখব। তারপর ও আত্মীয়-স্বজন সকলকে চমকে দিয়ে বলল, সোমবার উপবাস রাখব, ওটা শিবের দিন। ইরফান আসলে নিজের মতো করে ধর্মকে বিশ্বাস করে এসেছেন। ওঁর আধ্য়াত্মিকতা কখনওই গোঁড়া ছিল না। এই বিশ্বাস ইরফানের কাছে খুবই ব্যক্তিগত ছিল।’
সুতপা জানান, ইরফান বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ, আধ্যাত্মিক গুরুদের বই পড়তেন। তিনি উপনিষদ পড়েছিলেন, রামকৃষ্ণ পরমহংস , বিবেকানন্দ সবই পড়েছিলেন ... কিন্তু তিনি কখনও 'ধার্মিক' ব্যক্তি ছিলেন না। ওশো, মহাবীর - তিনি সবকিছুই পড়েছেন।
সুতপা এবং ইরফানের বিয়ে হয় ১৯৯৫ সালে। ১৯৯৮ সালে তাঁদের প্রথম সন্তান বাবিল খানের জন্ম হয়। ২০২২ সালে 'কালা' ছবির মাধ্যমে বাবিল তাঁর অভিনয়ে কেরিয়ারে পা রাখেন।
প্রসঙ্গত, নিজের কেরিয়ারের ক্ষেত্রে ইরফান শুরুর দিকেই বিশেষ সাফল্য পাননি তিনি। ২০১২ সালে 'পান সিং তোমর' মুক্তি পাওয়ার পর ইরফানের অভিনয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন বহু সিনেমাপ্রেমী থেকে ফিল্ম সমালোচকরা। এই ছবির দৌলতেই জাতীয় পুরস্কারও এসেছিল ইরফানের ঝুলিতে। ২০২১ সালে পদ্মশ্রীও পান ইরফান খান।