গত শনিবার ফেডারেশন ও গিল্ডের উপরে কাজ না দেওয়ার অভিযোগ এনে, আত্মহননের চেষ্টা করেন এক হেয়ার ড্রেসার। এমন নয়, টলিউডের মধ্যে চলা স্বজন-পোষণ বা থ্রেট কালচার সম্পর্কে অবগত ছিলেন না মানুষ। তবে শনিবারের ঘটনা যেন ভিতরে ভিতরে জমতে থাকা ক্ষোভে আগুনের স্ফুলিঙ্গ হিসেবে কাজ করে।
এরই মাঝে বিস্ফোরক দাবি করলেন সিনে ইলেকট্রিকাল গিল্ডের প্রাক্তন সদস্য সঞ্জয় দাস। ওই হেয়ার ড্রেসারের ঘটনার পর মুখ খুলেছেন তিনি।
হেয়ার ড্রেসারের আত্মহত্যার অভিযোগ সামনে আসার পর সঞ্জয়কে বলতে শোনা গেল, কাজের বিনিময়ে তাঁর কাছে টাকা চাওয়া হত। এখানেই শেষ নয়, চাহিদা মতো টাকা না দেওয়ায় তাঁর কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ২০১৬ সালে। আর যার দায় তিনি চাপালেন পুরোপুরি ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিসিয়ান্স অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার ঘাড়ে। যার মাথাতে রয়েছেন শাসক ঘনিষ্ঠ স্বরূপ বিশ্বাস।
সঞ্জয় আরও জানান, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে চার বার চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, সেই চিঠির কপি তিনি দিয়ে এসেছিলেন নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। কিন্তু কোনো সুবিধে হয়নি। তাই ধীরে ধীরে নিজেকে সরিয়ে নেন টলিউড ইন্ডাস্ট্রি থেকে।
কী ঘটে শনিবারে?
হেয়ার ড্রেসার গিল্ড ও ফেডারেশনের সঙ্গে এক মতবিরোধের কারণে একের পর এক কাজ কেড়ে নেওয়া হচ্ছিল ওই হেয়ার ড্রেসারের থেকে। মাস তিনেকের জন্য গিল্ড থেকে সাসপেন্ড হন। কিন্তু তারপর কাজে যোগ দিলেও, নির্দেশ ছিল তিনি নিজে কাজ জোগাড় করতে পারবেন না। পরিবার ছিল চরম অর্থকষ্টে।
এরপর রবিবার মৈনাক ভৌমিকের আগামী ছবির লুক সেট ছিল। যে কাজ জোগাড় করেছিলেন তিনি নিজেই। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাঁর কাছে ফোন আসে, গিল্ড থেকে বলা হয়েছে তাঁকে যেন কাজটি না দেওয়া হয়। এর পর তিনি (অভিযোগকারিনী) যোগাযোগ করেন ফেডারেশন সম্পাদকের সঙ্গে। সেখান থেকেও বলা হয়, গিল্ড ফোন করে তাঁকে অনুমতি না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
ফলে হতাশা গ্রাস করে ওই হেয়ার ড্রেসারকে। তিনি গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেন। আটকায় তাঁর মেয়ে। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। ছুটে যান পরিচালক সুদেষ্ণা রায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী, চৈতি ঘোষাল, মানালি দে, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়রা।
ওই শিল্পীর লেখা সুইসাইড লেটার, ভয়েস নোট সবই এসেছে সামনে। এখন দেখার, কতটা সমাধানের পথে এগোতে পারে টলিউডের মাথারা।