আরজি কর কাণ্ডের পর রাজ্য তথা দেশ উত্তাল। তবে এরই মাঝে একের পর অপরাধমূলক মামলায় হতাশাজনক ফলাফল সামনে আসছে। আর এবার সেবিষয়েই বেশকিছু প্রশ্ন তুলে দিলেন অভিনেতা পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায়। ঠিক কী লিখেছেন তিনি?নিঠারি হত্যা মামলার রায় নিয়ে তথাগত মুখোপাধ্যায় লেখেন, ‘এটা ভারতবর্ষ,এটা সিস্টেম,এটা নিঠারি হত্যাকাণ্ড। ২০০৬ সালে সিবিআই এর মতে ১৮-১৯ টা বাচ্চা আর নিঠারি সেক্টর৫ এর ভিক্টিমদের পরিবারগুলোর মতে প্রায় ৬০-৭০ টা বাচ্চা ছেলে এবং মেয়েকে প্রায় ৪ বছর ধরে নিয়মিত ধর্ষন করে, তারপর তাদের খুন করে তাদের মাংস খেয়েছে নিচের ছবির এই দুজন। নাম সুরিন্দর কোলি আর মনিন্দর সিং। বাড়ির সামনের ঢাকা বড় নর্দমা থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর কংকাল, বাড়ির ভেতর থেকে উদ্ধার হয়েছে বাচ্চাদের জামাকাপড়, শরীরের অংশাবশেষ। তাদের বাড়ির নাম দেওয়া হয় House of Horror। সরকারি লোকজনের উপস্থিতিতে দুজন অপরাধী তাদের বয়ানে স্বীকারও করেছে তাদের অপরাধের খতিয়ান। লোয়ার কোর্ট এবং সিবিআই-এর কোর্টে এদের অপরাধও প্রমানিত হয়, এবং এদের দুজনের মৃত্যু দন্ডের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই আদেশ স্থগিত করা হয়। অবশেষে এলাহাবাদ হাই কোর্টে ২০২৩ সালে যথেষ্ট প্রমানের অভাবে এই দুজন নরখাদক, ধর্ষক,খুনীকে বেকসুর খালাস করে দেওয়া হয় যথেষ্ট প্রমানের অভাবে। প্রমাণ! এইটা হোলো আমাদের দেশ, এইটা হোলো আমাদের বিচার ব্যবস্থা। সুতরাং অর্ধলুপ্ত প্রমাণ এবং বিচার ব্যবস্থা সাম্প্রতিক আর জি কর ঘটনার ক্ষেত্রে কি পার্থক্য তৈরি করবে তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে অন্তত এই দেশে।’ তথাগত মুখোপাধ্যায়ের এই পোস্টেই স্পষ্ট যে আরজি কর মামলায় আদালতের রায় আদৌ দোষীদের শাস্তি হবে কিনা তা নিয়ে তাঁর মনে সন্দেহ রয়েছে। আর নিঠারি হত্যাকাণ্ড নিয়ে ২০২৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ই এই সন্দেহ তৈরির মূল কারণ। তথাগত পোস্টে তাঁর সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন বহু নেটিজেন। একজন লেখেন, ‘আসলে দোষ টা আমাদের... আমরা কখনো অন্যদের দিকে তাকাই না.. আজ আমরা কৃতজ্ঞ যে সর্ব স্তরের মানুষ আর জি কর নিয়ে প্রতিবাদ করছেন.. Nithari নিয়ে cinema হয় প্রতিবাদ হয়না... বাকি বিচার ব্যবস্থা যে কীভাবে চলে কে জানে..।’কারোর মন্তব্য, ‘আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত। কালকেই সেক্টর ৩৬ ছবিটা দেখতে দেখতে ভাবছিলাম।’ একজন জানিয়েছেন, ‘আমরা নয়ডা আসি, এই ঘটনা ধরা পড়ার একবছর পর। আমাদের বাড়ির কাজের লোক বাঙালি, ওই পাড়াতেই থাকত। ওদের পাড়ার অনেক বাচ্চা মিসিং দের মধ্যে ছিল। সেটাই ভয়, হাজার মানুষ চিৎকার করুক সুপ্রিম কোর্ট প্রমাণ দেখাবে।’ এমনই অসংখ্য মন্তব্য উঠে এসেছে।এরপর ফের শনিবার তথাগত মুখোপাধ্যায় আরজি কর একটা পোস্টে লেখেন, ‘দুর্নীতি সর্বত্র।আর.জি.কর এর এই ঘটনা হিমশৈলের চূড়ামাত্র।দুর্নীতি নির্মূল করতে ব্যক্তিগত পরিসরে দুর্নীতির প্রতিবাদ করুন,তার অংশ না হয়ে। নাহলে জাস্টিস অধরাই থাকবে।’ তথাগত মুখোপাধ্যায়ের এই পোস্টেও সহমত প্রকাশ করেছেন বহু নেটনাগরিক। এদিকে শোনা যাচ্ছে, আরজি কর মামলা নিয়ে শুনানি পিছনোর আর্জি জানিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে রাজ্য। অর্থাৎ আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর এই মামলার শুনানি নাও হতে পারে বলে খবর। তবে সবটাই নির্ভর করছে প্রধান বিচারপতি ২৩ সেপ্টেম্বর, সোমবার ঠিক কী নির্দেশ দেন।