নব্বইয়ের দশকের একবারে শেষভাগে মুক্তি পেয়েছিল ‘তাল’। সুভাষ ঘাই পরিচালিত এই ছবির গান আজও সমান জনপ্রিয়। ঐশ্বর্য-অক্ষয়ের এই মিউজিক্যাল রোম্যান্সে দশকের পর দশক বুঁদ থেকেছে গোটা দেশ। ইশক বিনা,আগ লাগে লগ যায়ে থেকে তাল সে তাল মিলা- আজও ফেভারিট গানের তালিকায় সব্বার।
এই ছবির সঙ্গে বলিউডকে ফের নিজের জাত চিনিয়েছিলেন এ আর রহমান। সম্প্রতি এই ছবি নিয়ে একটি মজাদার গল্প ভাগ করে নিয়েছেন সুভাষ ঘাই। রেডিও নাশাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুভাষ জানান, এই ছবির গান তৈরির সময় সুরকার-গীতিকার জুটির মধ্যে যোগাযোগের মূল বাধা ছিল ভাষা! কারণ একজন ইংরেজীতে কথা বলতে পারতেন না, অন্যজন হিন্দি জানতেন না।
এ আর রহমান-আনন্দ বক্সীর ত্রাতা সুভাষ ঘাই
শুটিংয়ের সময় ভাষাগত প্রতিবন্ধকতার কারণে ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলেন দুজনেই। সেই কথা স্মরণ করে চলচ্চিত্র নির্মাতা জানান, 'যখন আমি প্রথম আনন্দ বক্সি এবং এ আর রহমানের সাথে দেখা করি, তখন আনন্দজি ইংরেজি জানতেন না এবং রহমান হিন্দি জানতেন না। আমি তাদের মধ্যে একটি হারমোনিয়াম রেখেছিলাম, ভেবেছিলাম যে কোনও যুগলবন্দি থাকতে পারে। তারা একে অপরকে জিজ্ঞাসা করেছিল, 'না, তুমি কিছু খেলো,' ‘না, তুমি কিছু খেলো। কিন্তু ১৫ মিনিট নীরবতার পর বুঝতে পারলাম যোগাযোগের ফাঁক রয়েছে। একজন ইংরেজি জানতেন না, অন্যজন হিন্দি জানতেন না।’
তবে সুভাষ জানিয়েছেন, প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত দুই শিল্পী একসঙ্গে কাজ করার পথ খুঁজে পেয়েছেন। এ আর রহমান প্রথমে সংগীত রচনা করেছিলেন এবং তারপরে আনন্দ বক্সী গানের কথা লিখেছিলেন।
ঐশ্বর্য রাই, অক্ষয় খান্না ছাড়াও এই ছবিতে অনিল কাপুর গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ছবিতে দেখা মিলেছিল অলোক নাথ, অমরীশ পুরি, মিতা বশিষ্ঠ, সৌরভ শুক্লা, সুষমা শেঠ, মনোজ পাহওয়ার। তাল শ্রেণী বিভাজনের মাঝে বেড়ে উঠা এক নিখাদ প্রেমের গল্প তাল, যেখানে একজন ব্যবসায়ী পুঁজিপতির ছেলে মানব গ্রামের সহজ-সরল মেয়ে মানসীর প্রেমে পড়ে। মানসীর বাবা পাহাড়ি গ্রামের একদন সঙ্গীত বিশারদ। মেয়েও বাবার থেকে সেই শিক্ষা পেয়েই বড় হয়েছে। মানসীর বাবা যখন মানবের পরিবারের দ্বারা অপমানিত হন, তখন তিনি মানসী জনপ্রিয় সংগীত সুরকার বিক্রান্তের সহায়তায় একজন বিখ্যাত পপ গায়ক হয়ে ওঠেন।
সুভাষ ঘাইয়ের বলিউড কেরিয়ার
সুভাষ ঘাই কার্জ, খলনায়ক, রাম লখন এবং দিল সে, পরদশের এর মতো অনেক জনপ্রিয় চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন। শেষবার তাঁকে পরিচালকের আসনে দেখা গিয়েছে যুবরাজ ছবিতে। ক্যাটরিনা-সলমন অভিনীত এই ছবির পর পরিচালনা থেকে দূরে সরে যান সুভাষ ঘাই।