অরিজিৎ সিং-এর গাওয়া ‘আর কবে’ গান এখন আরজি কর নিয়ে ওঠা প্রতিবাদের অন্যতম স্বর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরইমধ্যে নিজস্ব র্যাপ ভিডিয়ো সামনে আনলেন ঝিলম। যেখানে বেশ কিছু এমন ঘটনা রয়েছে, যা হয়তো বেশিরভাগ মেয়ের সঙ্গেই হয়েছে কখনো না কখনো। কখনও অটোতে, কখনো বা আবার ট্রেনে। শ্লীলতাহানির শিকার কম বেশি সব মহিলাই। তাঁদের সবারই আওয়াজ হয়ে উঠলেন বাংলার এই ইউটিইবার। ঝিলম গুপ্তর সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত গান, ‘তোমার স্বর আমার স্বর’-এর মিউজিক সামলেছেন ‘এক্স প্রেম’ খ্যাত সুরকার সপ্তক সানাই দাস ও ভিডিয়োটি পরিচালনা করেছেন শ্রেয়তমা দত্ত।
ঝিলমের গলায় একটি ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। তিনি গানে গানেই জানিয়েছেন বছর বারো বয়স তখন তাঁর। স্কুল ফ্রক গায়ে উঠেছিলেন ট্রেনে। ঝিলম গেয়েছেন, ‘ক্লাস সেভেনের আমি/ ফ্রক পরি শুধু/ ওদিকে কাকুর মনে পাছা আর দুদু/ স্টেশনে নামার আগে লেহা দরজায়/ ধরলো একটা লোক সজোরে আমায়/ বছর বারোর আমি সেদিনর মেয়ে/ তাকে আজও অভিশাপ দেই সুবিচার চেয়ে।’
এখানেই শেষ নয়, ক্লাস এইটেও একই ঘটনা। ঝিলম লিখেছেন, ‘তারপর একদিন অষ্টম শ্রেণী/ বাস কনডাক্টর খুঁজে নিল যোনি/ আমার বাড়িতে আজও বলিনি এসব/ কতবার আমি হারিয়েছি শৈশব।’
১৪ অগস্ট মেয়েদের রাত দখলের রাতে অভিযোগ ওঠে এক তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের বুকে হাত দিয়েছে পুলিশ, তা আসল না নকল জানতে। সেই কথারও উল্লেখ রয়েছে ঝিলমের ভিডিয়োতে- ‘বুকটা আসল না কি/ সে হদিশ নিতে/ কৌতূকি হাত গেছে/ রেইনবো বুকেতে/ মেয়েদের বুক? সে তো খেলনারই মতো/ ততটাই বেশি মজা যত বেশি ক্ষত’।
এরপর সবশেষে লিখলেন ৩১ বছরের তরুণী ডাক্তার প্রসঙ্গে। গাইলেন, ‘আমার বোনটা তবু/ পড়াশোনা করেছিল/ ডাক্তার হয়েছিল/সাফল্য ছুঁয়েছিল/ মুখটাও খুলেছিল/ তারপর…’
টিভি নাইনকে এক সাক্ষাৎকারে ঝিলম জানিয়েছেন গানের প্রতিট কথা তাঁর নিজের। তাঁর নিজের সঙ্গে ঘটা। তিনি জানিয়েছেন, ‘তখন আমার বয়স ১০। আমার পরিবারের এক সদস্য আচমকাই আমার স্তন স্পর্শ করে। সে যে কী চরম মানসিক যন্ত্রণা, আমি বলে বোঝাতে পারব না। আর এই ক্ষত কোনও দিন সারে না। আজও মনে পড়লে রাগে-ঘেন্নায় গা-টা জ্বলে যায়। একবার নয়, বারবার। বারবার।’ এমনকী মাকে এসেও বলেছিলেন ঝিলম। আর তাতে, তাঁর মায়ের জবাব ছিল, ‘চুপ-চুপ। লোকে শুনলে কী বলবে? ঝগড়া হবে’! শুধি তাই নয়, ঝিলম পরে জানতে পেরেছেন তাঁর থেকে ৩ বছরের ছোট, তাঁর বোনের সঙ্গেও পরিবারের সেই সদস্য একই কাণ্ড ঘটিয়েছে। বারবার জোর করে কোলে নিত।