
Betvisa
6.88% Weekly Cashback on 2025 IPL Sports
‘রাসবিহারী শৈলুষিক ’ থিয়েটার দলের পক্ষ থেকে দলের কর্ণধার,পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, অসীম রায়চৌধুরী, ডঃ অর্জুন দাশগুপ্ত, ডঃ চন্দ্রিমা দাশগুপ্ত,গৌতম পুরকায়াস্থ, শ্রমনা ঘোষ, সুদীপ্ত ঘোষ, চন্দন মুখোপাধ্যায়, সুরজিৎ রায়, সহ দলের অন্যন্য সদস্যরা মিলে ছুটে গিয়েছেন দূর্গত এলাকায় সব হারানো মানুষ গুলোর পাশে দাঁড়াতে। কোনও সরকারি সাহায্য বা গ্রান্ট ছাড়াই নিজেদের বিশ্বাস এবং ভালোবাসায় চলছে তাঁদের থিয়েটার দল। সেই বিশ্বাস এবং আরও কিছু বন্ধুদের ভরসা সঙ্গি করে তাঁরা ছুটে গিয়েছে প্রত্যন্ত হতে প্রত্যন্তে।
রইল ওই দলের আরও এক সদস্য, লেখক ও চিত্রনাট্যকার পদ্মনাভ দাশগুপ্ত-র অনুভূতিতে সেই উত্তাল সময়ের চালচিত্র।
চেষ্টা করেছি আমরা। সীমিত সামর্থ্য তবু হাল ছাড়ি নি…
‘যখন অন্য কিছু হতে চাই তখন উঠে পড়ে লেগে অভিনয় অথবা লেখালেখি করি। দল বেধে নাটক করে এক চরিত্র থেকে অন্য কাঠামোতে গিয়ে দাঁড়াই। কোনখানে দাড়িয়ে আছি সবাই মেপে নেওয়ার চেষ্টা করি। এ গেল ঘুম, খাওয়া ,নাম ,যশ রোজগারের ডাইরি। কিন্তু মুচকি হাসে যে তার নাম সময়। কখন কোন সিন যে নিজের মত পাল্টে দেয় কোন চিত্রনাট্য সেই গোলকধাঁধা ধরতে পারে না। তো সেরকম ভুতুড়ে এলেমেলো সময় এল কবন্ধ র মত। জাপটে ধরে পুরে তালা মেরে দিল ঘরে।দ্যাখ খেলা এবার,আগুন জ্বালিয়ে, গাছ ফেলে ,মানুষ মেরে সীমানা সাজিয়ে ,খুব ঘর সংসার করতে বসেছিল সাইবার এজ। আমার ঘরে পরমাণু আছে তোমার ঘরে আই সি বি এম। ইউরো,ডলার, ফ্রা,ব্যাংকে,সব শুন্য হাতে ফিরি হে নাথ পথে পথে, রাষ্ট্র দাদাদের মুক শুকিয়ে আমসি। হাততালি আর হুমকি ছাড়া কি বা করার আছে আর। নাটক বনধ,নাটকের সব বন্ধুরা চিন্তায়। মনে হল ঢের হল এইসব চরিত্রের নির্মাণ,লেখার অনাবিল আত্মসুখ, এখন যদি না কিছু করতে পারি তাহলে আয়না ফায়না ভেঙে ফেলা ভালো।
একমত হতে পেরে শৈলুষিক দলের সবাই বুঝল যে এটাই এখন লড়াই। এই ভেবেই সবাই এগিয়ে এসে প্রথমে ছোট একটা ফান্ড তৈরী করা হল যাতে যে মানুষ গুলো নাটকে আমাদের পাশে দাঁড়ান তাদের কাছে পৌঁছনো যায় । কমলেশ্বর ছবির মত বুঝিয়ে দেওয়ায় কাজটা সহজ হল। মেক আপ ,আলো, সেট সহ সব বিভাগের বন্ধুদের কাছে ওইটুকু আশ্বাস নিয়ে পৌঁছলাম আমরা । পৌঁছোলাম একাডেমি, তপন থিয়েটারের বন্ধুদের কাছে । অন্তত জানানো গেল আমরা আছি। তোমাদের মতই অপেক্ষা করছি আবার রিহার্সাল আবার নাটকের মঞ্চে ফিরব বলে ।
এই কাজে তো এগিয়ে গিয়ে হাত বাড়াতে হয়। সেরকম বন্ধু এই দলে অনেক,অসীম রায়চৌধুরী , শ্রমনা ঘোষ,ডক্টর অর্জুন দাশগুপ্ত ,গৌতম পুরকায়স্থ এরা এবং দলের সবাই মিলে জানান দিলাম আমরা আছি । এরকম সময়ে অন্য কিছু করার আর ইচ্ছেও নেই শুধু বন্ধুদের কথা ভাবা ছাড়া। আম্ফান বিধ্বস্ত জায়গা গুলোতে বন্ধুরা ছুটে গেল WBDF আর শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগের সঙ্গী হয়ে। কমলেশ্বর অনেক পুরনো স্টেথোস্কোপ হাতে তুলে নিল। এই ভাবে কাজ করতে করতে আরো বড় ঝড় এল যখন, তখন মনে হল আবার হাত বাড়ানোর সময় এসেছে।
দলের ছেলে মেয়েরা ওষুধ নিয়ে ডাক্তার বাবুদের সঙ্গে গেল সেই গ্রাম গুলোতে যেখানে মানুষ অপেক্ষা করছিল মানুষ দেখার জন্য। এভাবে আমরা নিজেদের কাছে পরীক্ষা দিচ্ছিলাম বারবার যাতে কোথাও অনুতাপ না থেকে যায়।
গোয়া থেকে তমাল রাহা জানাল তোদের ওখানে এক শ্রমিক পরিবার আটকে পড়েছে। যাবে ঝাড়খন্ডে ,একটু পাশে দাড়ানো যায়? সবাই চেষ্টা করা শুরু হল।বাসের টিকিট করে তাদের পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করতে পরিবারটি আশির্বাদ করে গেল। তাতে যা আনন্দ হল তা হাজারটা নাটকের শো করে হয় না বিশ্বাস করুন।
আর দলের সবাই এক একজন নিজের মত করে তাদের চেনা জানা গন্ডি পেরিয়ে আশ্বাস নিয়ে পৌঁছে গেছে যারা কঠিন লড়াই এ সহযোদ্ধা তাদের পাশে। রসদ নিয়ে পৌঁছে দিয়েছে কমিউনিটি কিচেনে ,ওষুধ নিয়ে দুর দূরান্তে ছুটেছে রাসবিহারী-শৈলুষিক নাটকের দল।
শিখলাম ,জানলাম আর আশ্বস্ত হলাম। কোথাও আমাদের ভাই বোনদের জন্য আমরা আছি আবার আমাদের জন্য তাঁরা আছে। মাঝখানে একটা দুঃসময় আমাদের আরও কাছাকাছি এনে দিল।’
6.88% Weekly Cashback on 2025 IPL Sports