স্টার জলসায় সদ্য শুরু হয়েছে ‘তোমাদের রাণী’। মেয়ে মানেই শুধু সন্তান-সংসার সামলাবে সেই দিন শেষ। এখন মেয়েরাও নিজস্ব পরিচিত গড়তে জানে। একটা ছেড়ে অন্যটা বেছে নেওয়ার দিন শেষ, এই ভাবনা নিয়েই এই মেগা। সুশান্ত দাসের এই সিরিয়ালের লিড রোলে দুই নতুন মুখ আভিকা মালাকার ও অর্কপ্রভ রায়। ‘তোমাদের রাণী’র রাগী ডাক্তার দুর্জয় ইতিমধ্যেই বহু মহিলার হার্টথ্রব নায়ক। জুনিয়র আর্টিস্ট হিসাবে কেরিয়ার শুরু, সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ করেছেন প্রকাশ প্রোডাকশনে। শ্যুটিং-এর ফাঁকে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে একান্ত আড্ডায় ধরা দিলেন অভিনেতা।
জুনিয়র আর্টিস্ট থেকে জলসার লিড হিরো, কেমন অনুভূতি?
অর্কপ্রভ: আমি প্রথম ক্যামেরা ফেস করেছিলাম ২০০৯ সালে। একটি ধারাবাহিকে আমি জুনিয়র আর্টিস্ট হিসাবে কাজ করেছিলাম। সেখান থেকেই শুরু। এরপর বিভিন্ন জায়গায় জুনিয়র আর্টিস্ট হিসাবে কাজ করেছি। যারা এখন জুনিয়র আর্টিস্টের কাজ করছো, তাদের বলতে চাইব তোমরা চেষ্টা করে যাও, একদিন না একদিন সফল হবেই।
ওয়েডিং ফটোগ্রাফার হিসাবেও তো কাজ করেছেন?
অর্কপ্রভ: আমি ৬ বছর ওয়েডিং ফটোগ্রাফার হিসাবে কাজ করেছি। কয়েক শো বিয়ে বাড়িতে ছবি তুলেছি। আমার আসলে একাধিক প্রফেশন বলতে পারেন, আমি সাড়ে চার বছর মুম্বইতে সময় কাটিয়েছি, সেখানে সহকারী পরিচালক হিসাবেও (আশ্রম ৩, পিচার্স ২) কাজ করেছি।
স্ট্রাগল না জার্নি, নিজের এই পথচলাকে কী নামে ডাকতে চাইবে?
অর্কপ্রভ: সবাই স্ট্রাগল নিয়ে অনেক কথা বলে, তবে আমার কাছে এটা জার্নি। আসলে আমি সবটাই হোঁচট খেয়ে শিখেছি, এই সফরটা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। সেটা স্ট্রাগল বলে আমি ছোট করতে চাই না। তাই সেটা জার্নিই থাকুক।
‘তোমাদের রাণী’র দুর্জয় তো খুব সিরিয়াস। কী বলবেন তাঁকে নিয়ে?
অর্কপ্রভ: দুর্জয় প্রচণ্ড অ্যাম্বিসাস একটা চরিত্র। একটু বদরাগী, একটু রগচটা। একটু সিরিয়াস। বাস্তব জীবনে আমি একদম সিরিয়াস নই। দুর্জয় খুব বদরাগী, আমি কিন্তু খুব হাসিখুশি মানুষ।
দুর্জয় তো ডাক্তার, অর্কপ্রভ কী নিয়ে পড়াশোনা করেছে?
অর্কপ্রভ: আমার পড়াশোনা শেষ হয়েছে ২০১৪-তে। জার্নালিজম এবং মাস কমিউনিকেশন নিয়ে অনার্স করেছি। গুরুদাস কলেজ থেকে, আমার বয়স এখন ৩১! অনেকেই অবশ্য সেটা আন্দাজ করতে পারেন না (মুচকি হাসি)।
অভিনেতা হওয়াটা কি ছেলেবেলার স্বপ্ন?
অর্কপ্রভ: আমি ছোট থেকেই অভিনেতা বা ফিল্মমেকার হতে চেয়েছি। এটা নিয়ে আমার পুঁথিগত শিক্ষা নেই ঠিকই, আমি পড়াশোনা প্রচুর করেছি। কিন্তু আমি প্রচুর সিনেমা দেখি। আজ পর্যন্ত অন্তত ১০ হাজার সিনেমা দেখেছি, রোজই কিছু না কিছু নিয়ে রিসার্চ চলতে থাকে আমার।
পর্দায় যেহেতু ডাক্তারের চরিত্রে, কোনওরম ট্রেনিং নিলেন?
অর্কপ্রভ: পরিচিত কিছু চিকিৎসকদের থেকে সাহায্য নিচ্ছি। ৯০ ডিগ্রি ইনজেকশন আর ৪৫ ডিগ্রি ইনজেকশন আমি শিখলাম, পালস কী করে পরীক্ষা করে সেটা শিখলাম। এইরকমই ছোটখাটো বিষয়গুলো একটু জেনে নিচ্ছি, চেষ্টা করব কোনওরকম ভুলচুক না হয়, ডাক্তারি অত্যন্ত মহান একটা পেশা, সেখানে যেন কোনও ভুল না হয়।
অর্কপ্রভর এই জার্নিতে পরিবার কতটা পাশে থেকেছে?
অর্কপ্রভ: আমার মা শ্রুতি নাটক করতেন, বাবা পারকসন এবং তবলাবাদক, ছোট থেকেই গান-বাজনার পরিবেশে বড় হয়েছি। আমার পরিবার সবসময় আমাকে এমনই একটা পেশায় দেখতে চেয়েছে। আমি কর্পোরেট জগতে চাকরি করব এটা ভাবেননি। মা আমাকে নিয়ে শুরু থেকেই প্রচণ্ড অ্যাম্বিসাস। জানেন, মা আমার কোনও ডাক নাম রাখেননি। চেয়েছেন ছেলেকে অর্কপ্রভ নামেই সবাই চিনুক। তোমাদের রাণী-র গল্প তো মা-দের নিয়েই। আসলে মায়েরা সব পারে।
আগামিতে কি পরিচালনায় আসার ইচ্ছে রয়েছে?
অর্কপ্রভ: রানি যেমন মা আর ডাক্তার একসঙ্গে হতে চায় আমিও অভিনেতা আর পরিচালক একসঙ্গে হতে চাই। সুযোগ পেলে প্রযোজকও হয়ে যাব, হবই।