নন্দনেই জায়গা হল না সত্যজিৎ রায়ের জীবনভিত্তিক ছবি, ‘অপরাজিত'র। আর তা নিয়েই বিতর্ক তুঙ্গে। পরিচালক অনীক দত্ত এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি বেশ কয়েক দিন ধরেই শুনছিলেন, ছবিটি নন্দনে দেখানো না-ও হতে পারে।একথা অনেকেরই জানা, প্রকাশ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকারের সমালোচনায় বহুবার মুখর হয়েছেন অনীক দত্ত। সেই কারণেই কি কোপ পড়ল তাঁর ছবির উপর? এমন কথা নানা মহলেই শোনা যাচ্ছে। আর তা নিয়েই খোঁচা দিয়েছেন দেবাংশু।ফেসবুকে দেবাংশু লিখেছেন, ‘গুজব ছড়িয়ে কিংবা ভিক্টিম কার্ড প্লে করে সিনেমা হিট করানোর এই পলিসি পুরোনো। ভূতেদের শৈল্পিক ‘বাবা’ নাকি তৃণমূলের বিরুদ্ধে কথা বলেন তাই তাঁর সিনেমা নন্দনে আটকে দেওয়া হয়েছে! বিভিন্ন শোগুলি নাকি দখল করে রয়েছে শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের ছবি! দীপক অধিকারীর ‘কিশমিশ’ চলছে, তিনি তৃণমূল সাংসদ। সোহম চক্রবর্তীর ‘কলকাতার হ্যারি’ চলছে, তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক। বুঝলাম! কিন্তু ওই নির্দিষ্ট সিনেমায় তো এই তৃণমূল কংগ্রেসেরই একটি শাখা সংগঠনের সর্বময় নেত্রী স্বয়ং অন্যতম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন! সেই যুক্তিতে এটাও তো সুযোগ পাওয়ার কথা! তাই না?’আসলে এই মুহূর্তে নন্দনে রমরমিয়ে চলছে ‘কিশমিশ’, ‘মিনি’, ‘কলকাতার হ্যারি'। প্রথম দু’টি তৃণমূল সাংসদ দেব ও মিমির ছবি। পরেরটি শাসকদলের বিধায়ক সোহম চক্রবর্তীর। ‘অপরাজিত’ ছবিতে শাসক দলের কোনও ছোঁয়া নেই বললে ভুল বলা হবে। সেটির দিকেই ইঙ্গিত করছেন দেবাংশু। এই ছবিতে সত্যজিৎ পত্নীর চরিত্রে অভিনয় করছেন তৃণমূলের একনিষ্ঠ নেত্রী সায়নী ঘোষ।এর পরে দেবাংশু লেখেন, ‘এই নির্দিষ্ট ছবিটি তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকার কিংবা কলকাতা কর্পোরেশন নিয়ন্ত্রিত নজরুল তীর্থ এবং স্টার থিয়েটারে দিব্য শো পেয়েছে। আঁতেল সমাজের শিরোমণি সেই ব্যক্তি রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত ভাবে একটি নির্দিষ্ট মহিলার ঘোরবিরোধী বলেই যদি তাঁর শোকে আটকানোর হত, তাহলে একই ভাবে এই দুটি সিনেমা হলেও সুযোগ পেত না ছবিটি।’দেবাংশুর দাবি, ‘নিজেকে ‘আক্রান্ত’ প্রমাণ করতে পারলে সিমপ্যাথি এফেক্ট সরাসরি গিয়ে পড়ে বক্সঅফিস কালেকশনে। কিন্তু সেই যুগ আর নেই। বর্তমান দিনে বুদ্ধিমান গ্রাহকদের বাজারে জীবনের কোনও তাসেই আর ‘ভিকটিম কার্ড’ খেলে জেতা যাবে না।’দেবাংশু অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি ছবিটি দেখবেন। লিখেছেন, ‘সিনেমাটি আমারও দেখার ইচ্ছা আছে, বিষয় যেহেতু সত্যজিৎ রায়। আমি স্টার থিয়েটার বা নজরুল তীর্থ থেকে অবশ্যই দেখে নেব। আমাকে নন্দনের অপেক্ষা করতে হবে না! ছবিটির জন্য শুভেচ্ছা রইল। প্রত্যেক কলাকুশলীর পরিশ্রম সার্থক হোক।’