‘সারেগামাপা-২০১৯' এর চ্যাম্পিয়ন তিনি। আর গানের দুনিয়ায় বর্তমানে বেশ পরিচিত মুখ অঙ্কিতা ভট্টাচার্য। টেলিভিশনের পর্দায় হোক বা ফোনের স্পিকারে অঙ্কিতার কণ্ঠ আমরা কমবেশি অনেকেই শুনেছি। তবে সম্প্রতি এক টক শোয়ে এসে নিজের লড়াই ও এই জয় যাত্রার গল্প বললেন অঙ্কিতা। লড়াইটা কিন্তু মোটেও খুব সহজ ছিল না। পরিবারের অনেকেই অঙ্কিতাকে বলেছিলেন, 'গান গেয়ে কী হবে? দু'দিন বাদে তো বিয়ে হয়ে যাবে।'
হ্যাঁ, এমন কথাও শুনতে হয়েছিল গোবরডাঙার মেয়ে অঙ্কিতাকে। ঠিক কী বলেছেন বাংলা সারেগামাপা জয়ী এই গায়িকা?
অঙ্কিতা 'জোশ টকস'-এ এসে বলেন, আমি যখন শুরু করি তখন অনেকেই বলেছিলেন, গান গেয়ে কী হবে? দু'দিন বাদে তো বিয়ে হয়ে যাবে। সব ভেবে বাবার তো হাইপ্রেশার হয়ে গেল। আসলে আমি যখন শুরু করেছিলান, তখন আমিই বোধহয় ওই অঞ্চলে প্রথম পড়াশোনাটা একটু সাইডে রেখে গান শুরু করি। আমার বাড়িতেও প্রত্যেকেই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়র, প্রথম আমিই গানের জগতে এসেছি। তবে মায়ের কাছেই প্রথম গানটা শিখেছি।'
আরও পড়ুন-সামনে এল উইনডোজ প্রোডাকশনের পুজোর ছবির নাম, 'রঘুডাকাত'-এর সঙ্গে পাঙ্গা নিতে আসছে কে?
অঙ্কিতা আরও বলেন, ‘যখন শেখা শুরু করেছিলাম, আমার বাবা-মা আমার পাশে ছিলেন। তবে নাম নিতে চাই না, আমার বাড়ির কেউ কেউ বলেছিলেন, তুমি গ্রামের মেয়ে, গান কেন করবে? গান গেয়ে কী হবে, দুদিন বাদে বিয়ে দিয়ে দিতে হবে। তবে বাবা-মা বলেছিলেন, তুই যা অডিশন দে, আর চান্স পেয়ে গেলে তো ভাগ্যের বিষয়। এরপর গান গেয়ে বিভিন্ন জায়গায় অডিশন দিতে শুরু করি।’
অঙ্কিতা বলেন, 'বাবা-ই আমায় অডিশন দিতে নিয়ে যেত, তখন যাতায়াতের ভাড়া বহন করাই কঠিন ছিল। মুম্বইয়ে গেলাম গানের অডিশন দিতে। তবে ওখানে ঠিক অতটা জমল না। হচ্ছে আবার হচ্ছে না। একদম দোরগোড়ায় গিয়ে হয়ত আউট হয়ে যাচ্ছি। ভীষণ ভেঙে পড়েঠিলাম। ভাবছি এত চেষ্টা করছি তবুও হচ্ছে না! তাই ভেবেছিলাম, যদি এটায় (সারেগামাপা) না হয় আমি গান বাজনা ছেড়ে দেব। তখন মনে হচ্ছিল কী লাভ, এত কষ্ট করছি। বাড়িতে ফিরি, সারেগামাপা- অডিশন হবে। বাবা বলল, তুই যা এটায় না হলে আর তোকে জোর করব না।
এরপর বাবা-মায়ের কথা ভেবে গেলাম। শেষ প্রচেষ্টা, ১,২, ৩ ৪ রাউন্ড অডিশন হল, চান্স পেলাম। এরপর গ্রুমিং-এর জন্য় কল করল। গ্রুমিং-এর থেকেও বাদ দেওয়া হয় অনেককে। এরপর টিভি রাউন্ড অডিশন দিলাম। ওই দিনটা কোনওদিনই ভুলব না, করলে প্যায়ার গানটি গেয়েছিলাম। সারেগামাপা আমায় অনেক কিছু দিয়েছে। তবে এখন আমার সবথেকে বেশি আনন্দ হয় এই ভেবে যে, যাঁরা বলতেন গান গেয়ে কী হবে, মেয়ের তো বিয়ে দিতে হবে, সেই ভুলটা ভাঙতে পেরেছি।'