তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর জেলায় জেলায় ব্যাপক অশান্তি হতে দেখা গিয়েছে। এবার বিধায়কদের পুরসভা ভোটে আর প্রার্থী করা হবে না বলা হলেও দু’এক জায়গায় বিধায়কদের টিকিট দেওয়া হয়েছে। তবে সেটি রিভিউ করে সরানো হবে বলে জানানো হয়েছে। এদিকে যাঁরা দীর্ঘদিন তৃণমূল কংগ্রেস করছেন, এলাকার নেতা–কর্মী তাঁরা টিকিট না পেয়ে হতাশ। এই পরিস্থিতিতে ঠিক হয়েছে, গোটা বিষয়টির উপর সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে আর একটি প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।
এই ঘটনার পর দেখা গেল, পূর্ব মেদিনীপুরের নেতা তথা মন্ত্রী অখিল গিরি এবং তাঁর অনুগামীরা গোঁসা করেছেন। তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এই প্রার্থী তালিকা নিয়ে। এমনকী নিজে পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা পর্যন্ত বলেছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার ক্ষীরপাই এলাকার যুব তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা তাপস ঘোষ টিকিট না পেয়ে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। কেঁদে ফেলেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। নদীয়ায় সারারাত আগুন জ্বলেছে এই প্রার্থী তালিকাকে কেন্দ্র করে।
খড়গপুরে দেখা গেল, তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শৈলেন্দ্র সিংয়ের নাম প্রার্থী তালিকা থেকে সরে যাওয়ায় তিনি সরাসরি রাস্তায় পেট্রোল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আর তাঁর অনুগামীরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে, অবরোধ করে প্রতিবাদ করেন। আলিপুরদুয়ারে টাউন ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় টিকিট না পেয়ে দলের অন্দরে তীব্র ক্ষোভ উগড়ে দেন।
একই ছবি দেখা যায় বর্ধমানে। সেখানে বিক্ষোভ চরমে ওঠে। এখানে যাঁকে প্রার্থী করার কথা ছিল তা করা হয়নি। তাই শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিক্ষোভ দেখা যায়। যে প্রার্থী করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। এরপর দেখা যায়, বনগাঁ পুরসভার প্রার্থী বদল নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী–সমর্থকরা। এখানের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে সন্ধ্যা দাসকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। যা নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের কান্দিতেও প্রার্থী তালিকা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বিক্ষোভ অব্যাহত। এখানে জয়দবে ঘটককে প্রার্থী করেছে দল। যেখানে স্থানীয়দের দাবি ছিল মধু দত্তকে প্রার্থী করতে হবে। হাবড়া, বনগাঁ, গোবরডাঙা ও বসিরহাটে এই চিত্র দেখা গিয়েছে। কারণ এখানের প্রাক্তন চার কাউন্সিলরকে টিকিট দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। অশোকনগর পুরসভার প্রশাসকও এবার টিকিট পায়নি। এখানেই সব থেকে বেশি রদবদল হয়েছে। এখানে ১৫ জন নতুন মুখ আনা হয়েছে। মধ্যমগ্রাম পুরসভায় তিন প্রাক্তন কাউন্সিলর টিকিট পাননি। তবে এখানে সংরক্ষণের গেরো কাজ করেছে। কাঁচড়াপাড়ায় শুভ্রাংশু রায়কে টিকিট দেওয়া হয়েছে। সুতরাং উত্তর থেকে দক্ষিণ প্রায় সব জেলাতেই এই ক্ষোভের আগুন ধিকি ধিকি জ্বলছে।