আইপিএলের আঙিনায় আবির্ভাবেই এমন চমক দিতে দেখা গিয়েছে খুব কম ক্রিকেটারকেই। নিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমেই চলতি আইপিএলের সব থেকে গতিশীল বলের রেকর্ড নিজের দখলে নিয়েছেন মায়াঙ্ক যাদব। লখনউ সুপার জায়ান্টসের তরুণ পেসার শুধু চলতি আইপিএলেরই নয়, বরং সার্বিকভাবে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে চতুর্থ দ্রুততম বল করেছেন নিজের অভিষেক আইপিএল ম্যাচেই।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ধারাবাহিকভাবে ১৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার গতিতে বল করার ক্ষমতা রয়েছে মায়াঙ্কের। সেই সঙ্গে নিখুঁত লাইন-লেনথে উইকেট-টেকার বোলার হিসেবে উপস্থাপন করেছেন নিজেকে। মায়াঙ্ক প্রথম ২ ম্যাচে মাঠে নেমেই তুলে নেন ৬টি উইকেট। যদিও তৃতীয় ম্যাচে মাঠে নেমে মাত্র ১ ওভার বল করেই মাঠ ছাড়তে হয় মায়াঙ্ককে।
স্বাভাবিকভাবেই এমন আগুনে পেসারকে নিয়ে উচ্ছ্বাসের বাতাবরণ ভারতীয় ক্রিকেটমহলে। অনেকেই মনে করছেন যে, চলতি আইপিএলে চমক জারি রাখতে পারলে আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপের দলে জায়গা পেয়ে যেতে পারেন মায়াঙ্ক। সেই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়েও দেওয়া যাচ্ছে না। ক্রিকবাজের খবর অনুযায়ী, মায়াঙ্কের ১৫৬.৭ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার বল নজর কেড়েছে জাতীয় নির্বাচকদের। তবে তাঁকে বিশ্বকাপের দলে বিবেচনা করার আগে চারটি বিষয়ের দিকে নজর রাখছেন অজিত আগরকররা।
প্রথমত, মায়াঙ্কের ফিটনেস নিয়ে সমস্যা রয়েছে। তিনি ৩টি মরশুম লখনউ শিবিরে রয়েছেন। তবে এই প্রথমবার মাঠে নামার সুযোগ পান। গত বছর চোটের জন্য মাঠে নামা হয়নি তাঁর। চোটপ্রবণ পেসারদের পক্ষে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা মুশকিল। যদিও লখনউ শিবিরের তরফে জানানো হয়েছে যে, তলপেটে ব্যথা অনুভব করায় মায়াঙ্কের ওয়ার্কলোড ম্যানেজের দিকে নজর দিয়েছে তারা। তাই পুরোপুরি ফিট না হলে জাতীয় দলে বিবেচিত হওয়া সম্ভব নয় মায়াঙ্কের পক্ষে।
দ্বিতীয়ত, মায়াঙ্কের ধারাবাহিকতার দিকেও নজর রাখছেন নির্বাচকরা। ধারাবাহিকভাবে ভালো বল না করলে গতি থেকেও কোনও লাভ নেই। ঠিক যেমনটা উমরান মালিকের সঙ্গে ঘটেছে। গতি থাকা সত্ত্বেও জাতীয় দলে নিজের জায়গা ধরে রাখা সম্ভব হয়নি তাঁর পক্ষে। নিয়মিত আইপিএলেও মাঠে নামার সুযোগ পাচ্ছেন না উমরান।
তৃতীয়ত, বিশ্বকাপের মতো সর্বোচ্চ মঞ্চে জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে হলে ম্যাচ পড়ার দক্ষতা থাকা দরকার। মায়াঙ্ক সেই নিরিখে কতটা পরিণত হয়ে উঠেছেন, সেটাও জাতীয় নির্বাচকদের বিবেচনায় থাকবে।
সর্বোপরি, মায়াঙ্কের বোলিং কতটা নিখুঁত, সেটাও পরীক্ষিত হওয়া দরকার বলে মনে করছেন নির্বাচকরা। সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় বল রাখাটা টি-২০ ক্রিকেটে কতটা জরুরি, সেটা আলাদা করে বলে দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।