ছেলে অঙ্গদ বুমরাহকে নিয়ে যে ট্রোলের বন্যা বইছে, তা নিয়ে চূড়ান্ত ক্ষোভপ্রকাশ করলেন সঞ্জনা গণেশন। শনিবার লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে মাঠে বাবা জসপ্রীত বুমরাহের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় অঙ্গদের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে যায়। বুমরাহ উইকেট নেওয়ায় পুরো ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম (মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হোমগ্রাউন্ড) উচ্ছ্বাসপ্রকাশ করলেও মা সঞ্জনার কোলে বসে থাকা খুদে অঙ্গদকে কিছুটা গম্ভীর মুখে দেখা গিয়েছিল। আর দেড় বছরের শিশু কেন উচ্ছ্বাসপ্রকাশ করেনি, কেন চুপ করে আসে, তা নিয়ে নেটিজেনদের একাংশ হাসাহাসি শুরু করে দেন। আর তা নিয়েই সোমবার ক্ষোভ উগরে দিলেন সঞ্জনা।
‘আমাদের ছেলে আপনাদের বিনোদনের বিষয় নয়'
সোমবার ইনস্টাগ্রামে সঞ্চালক তথা জসপ্রীতের স্ত্রী সঞ্জনা বলেন, ‘আমাদের ছেলে আপনাদের বিনোদনের বিষয় নয়। নিজের ক্ষমতায় যতটা সম্ভব, ততটা দিয়েই জসপ্রীত এবং আমি চেষ্টা করি যাতে অঙ্গদকে সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়া থেকে দূরে রাখা যায়। কারণ ইন্টারনেটের দুনিয়া জঘন্য এবং ঘৃণ্য। ক্যামেরা ভরতি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শিশুকে নিয়ে আসার প্রভাব আমি জানি। কিন্তু একটা বিষয় দয়া করে বুঝুন যে শুধুমাত্র জসপ্রীতকে সমর্থন করতে আমি এবং অঙ্গদ মাঠে গিয়েছিলাম। আর কোনও উদ্দেশ্য ছিল না।’
আরও পড়ুন: ‘এটা আমার মাঠ’, দিল্লিতে জিতে রাহুলের সামনেই সেলিব্রেশন বিরাটের, মেটালেন 'হিসাব'
অঙ্গদকে 'কনটেন্টে' পরিণত করার কোনও বাসনা নেই
সঞ্জনা খুব স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, অঙ্গদকে সোশ্যাল মিডিয়ার 'কনটেন্টে' পরিণত করার কোনও বাসনা নেই তাঁদের। তিন সেকেন্ডের ফুটেজ দেখে কয়েকজন 'কি-বোর্ডের যোদ্ধা' (পড়ুন নেটিজেন) নির্ধারণ করতে পারেন না যে অঙ্গদের কী সমস্যা, ওর চরিত্র কেমন বা অঙ্গদ আদতে কে। দেড় বছরের ছেলে নিজের মায়ের সঙ্গে বাবার হয়ে স্রেফ গলা ফাটাতে গিয়েছিল।
'সমাজ হিসেবে আমরা কেমন হচ্ছি, সেটা বোঝা যাচ্ছে'
বুমরাহের স্ত্রী'র কথায়, ‘ওর বয়স মাত্র দেড় বছর। একটা বাচ্চাকে নিয়ে ট্রমা, ডিপ্রেশনের মতো শব্দগুলো যে ছুড়ে দেওয়া হচ্ছে, সেটা থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে সমাজ হিসেবে আমরা কেমন হয়ে উঠছি। আর সত্যি বলতে সেটা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমাদের ছেলের বিষয়ে আপনারা কিছু জানেন না। আমাদের জীবনের বিষয়েও কিছু জানেন না আপনারা। তাই আমি অনুরোধ করব যে আপনারা অনলাইনেও সেরকম আচরণ করবেন।’
আরও পড়ুন: শুধু RCB, GT, DC, MI নয়, প্লে-অফে উঠতে পারে CSK, RR, KKR, SRH! জেনে নিন শেষ চারে ওঠার সম্ভাবনা কত?
আর সঞ্জনা যে কথা বলেছেন, তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন নেটিজেনদের একাংশও। তাঁদের বক্তব্য, অঙ্গদের বয়স দেড় বছর। এটা খুব স্বাভাবিক যে এই বয়সে অঙ্গদ বুঝতে পারবে না যে তার বাবা ক্রিকেট মাঠে কী জাদু দেখাচ্ছে। ফলে এক বাচ্চাকে অহেতুক টানাটানি না করার পরামর্শ দিয়েছেন অনেকেই।
আরও পড়ুন: টি-টোয়েন্টি এতটাও সহজ নয়… সমালোচকদের জবাব দিয়ে ক্রুণালের প্রশংসায় কোহলি
তবে এই প্রথম অঙ্গদকে নিয়ে এরকম ট্রোলের বন্যা বইল না। ২০২৪ সালে ভারত যখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল, তখন একইরকম ভাবে বুমরাহের ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে হাসাহাসি করেছিলেন নেটিজেনদের একাংশ। বিশ্বকাপ জয়ের পরে ভারতে ফিরে যখন নরেন্দ্র মোদীর ভারতীয় টিম দেখা করেছিল, তখন অঙ্গদকে কোলে নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তখনও অঙ্গদকে দেখে নেটিজেনদের একাংশ বলেছিলেন, ‘অঙ্গদকে কোনও কিছুই উত্তেজিত করে তোলে না।’