সুপার ওভারে শুধু ওয়াইডেই সাত রান হজম করল পাকিস্তান। তারপর দুর্দান্ত ক্যাচ নিলেন আমেরিকার মিলিন্দ কুমার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমেরিকা এবং পাকিস্তানের ম্যাচের সুপার ওভারে সেই দুটি মুহূর্তের কোলাজই পুরো ফারাক গড়ে দিল। আর পাকিস্তানকে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয় ছিনিয়ে নিল আমেরিকা। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, ম্যাচটা সুপার ওভারে গড়ানোর কথাই ছিল না। ২০ ওভারের মধ্যেই জেতা উচিত ছিল আমেরিকার। কিন্তু তৃতীয় উইকেট পড়ার পরে বাঁ-হাতি কোরি অ্যান্ডারসনকে না নামিয়ে ট্যাকটিকাল ভুল করেছিলেন মোনাঙ্ক প্যাটেলরা। আর বাঁ-হাতি ব্যাটার কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন, তা সুপার ওভারে বাঁ-হাতি হরমিত সিংকে দেখেই বোঝা দিয়েছে। যিনি ব্যাটে একটা বলও না ঠেকিয়ে সুপার ওভারে আমেরিকার স্কোরটা ১৮ রানে পৌঁছে দেন। সেই সুপার ওভার কীভাবে এগিয়ে গেল, তা দেখে নিন।
আরও পড়ুন: অভিনব সিদ্ধান্ত ভারতীয় ক্রিকেটে! ঐতিহ্যশালী প্রতিযোগিতা থেকে উঠে যাচ্ছে টস
সুপার ওভারে আমেরিকার ব্যাটিং এবং পাকিস্তানের বোলিং
প্রথম বল: অ্যারন জোনসের থেকে বলটা দূরে রাখতে চান মহম্মদ আমির। কিন্তু বলটা এতটাই দূরে ছিল যে ওয়াইড হয়ে যাচ্ছিল। সেটা অবশ্য হতে দেননি জোনস। বলটা বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে দেন। ১ বলে ৪ রান।
দ্বিতীয় বল: নিখুঁত ইয়র্কার আমিরের। তবে ভালো খেলেন জোনস। মিড-উইকেট দিয়ে বলটা ফ্লিক করে দেন। দু'রান নেন। ২ বলে ৬ রান।
তৃতীয় বল: আরও একটা নিখুঁত ইয়র্কার আমিরের। জোনসের কাছে হাত খোলার কোনও সুযোগ ছিল না। ৩ বলে ৭ রান।
চতুর্থ বল: ওয়াইড করেন আমির। দৌড়ে এক রান নিয়ে নেন হরমিত। ৩ বলে ৯ রান।
চতুর্থ বল: এক রান নেন জোনস। ৪ বলে ১০ রান।
পঞ্চম বল: ফের ওয়াইড করেন আমির। সঙ্গে দৌড়ে এক রান নিয়ে নেয় হরমিত। যোগ হয় দু'রান। ৪ বলে ১২ রান।
পঞ্চম বল: আমিরের বলটা কাট করেন জোনস। দু'রান নেন। ৫ বলে স্কোর ১৪ রান।
ষষ্ঠ বল: ওয়াইড করেন আমির। রিজওয়ান বল ধরতে-ধরতে এক রান নিতে দৌড়ান জোনসরা। রিজওয়ান থ্রো করেন। ওভারথ্রো হয়ে যায়। দৌড়ে আরও এক রান নেয় আমেরিকা। তিন রান যোগ হয়। ৫ বলে ১৭ রান।
ষষ্ঠ বল: ইয়র্কার করতে যান আমির। স্কোয়ার লেগের দিকে বলটা ঠেলে দেন জোনস। দ্বিতীয় রান নেওয়ার চেষ্টা করেন। রান-আউট হয়ে যান। ৬ বলে ১৮ রান।
সুপার ওভারে পাকিস্তানের ব্যাটিং এবং আমেরিকার বোলিং
প্রথম বল: ইফতিকার আহমেদকে অনুসরণ করেন সৌরভ নেত্রভালকর। কোনও রান হয়নি। ১ বলে ০ রান।
দ্বিতীয় বল: লেংথ বল করেন সৌরভ। পুল মারেন ইফতিকার। লং-অন এবং ডিপ মিড-উইকেটের মধ্যে দিয়ে চার হয়ে যায়। ২ বলে ৪ রান।
তৃতীয় বল: অবিশ্বাস্য ক্যাচ নেন সুপার-সাব মিলিন্দ কুমার (ভারতীয় বংশোদ্ভূত, দিল্লিতে জন্ম, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে ছিলেন)। জোনসের জায়গায় তিনি ফিল্ডিং করতে নামেন। ইফতিকারকে নীচু ফুলটস করেন সৌরভ। বড় শট মারতে যান ইফতিকার। দুর্দান্ত ক্যাচ নেন মিলিন্দ। তিনি লং-অফে ছিলেন। পা ফেলে কিছুটা এগিয়ে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুরন্ত ক্যাচ নেন। বলটা ক্রমশ নীচের দিকে নামছিল। ফলে অত্যন্ত কঠিন ছিল ক্যাচ। ৩ বলে ৪ রান।
চতুর্থ বল: ওয়াইড করেন সৌরভ। বলটা ছেড়ে দেন শাদাব খান। ৩ বলে ৫ রান।
চতুর্থ বল: ভাগ্যের বদন্যতায় চার পেয়ে যায় পাকিস্তান। পায়ের আঙুলে বলটা লেগে চার হয়ে যায়। ৪ বলে ৯ রান।
পঞ্চম বল: দারুণ ইয়র্কার। শাদাব বলটা তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু লং-অফ এবং লং-অনের মধ্যে গিয়ে পড়ে বলটা। দু'রান নেন শাদাব। ৫ বলে ১১ রান।
ষষ্ঠ বল: শেষ বলে সাত রান দরকার ছিল। ছক্কা মারলে ফের সুপার ওভার হত। কিন্তু এক রানের বেশি নিতে পারেননি শাদাব। পাঁচ রানে জিতে যায় আমেরিকা।
আরও পড়ুন: নিজে করলেন ৪৩ বলে ৪৪! অথচ হারের পর শাদাব খানের ওপর দায় ঠেললেন পাক অধিনায়ক