ছেলে 'বর্ডার গাভাসকর ট্রফিতে' টেস্ট অভিষেক করেছে। অনেকেরই নজর কেড়েছে নীতীশ রেড্ডি। সেই সিরিজের চতুর্থ ম্যাচেই আবার সেঞ্চুরি করে ভারতকে খেলায় ফিরিয়েছেন নীতীশ। মাঠে বসে ছেলের খেলা দেখে আবেগে ভেসেছেন নীতীশের বাবা। সেই আবেগতাড়িত সিনিয়র রেড্ডি মেলবোর্নে মুখোমুখি হন খোদ সুনীল গাভসকরেরও, যাঁর নামে এই সিরিজের ট্রফি নামাঙ্কিত। ভারতীয় ক্রিকেটের 'প্রথম লিটল মাস্টারকে' দেখেই ফের আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন নীতীশের বাবা। গাভাসকরের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন রেড্ডি সিনিয়র। সেই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন নীতীশের মা-ও। তিনিও ঝুঁকে পড়েন গাভাসকরকে। এছাড়াও নীতীশের বোনও প্রণাম করেন গাভাসকরকে।
এদিকে স্টারস্পোর্টসের হয়ে নীতীশের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন রবি শাস্ত্রীও। সেই সময় সেখানে উপস্থিত থাকা সুনীল গাভাসকর আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। নীতীশের বাবার সঙ্গে কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন সুনীল গাভাসকর। বলেন, 'আপনার জন্য়ে ভারতীয় ক্রিকেট একজন হীরে পেয়েছে।' এদিকে রবি শাস্ত্রীও জানান, গতকাল নীতীশের সেঞ্চুরির সময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি। রবি জানান, নীতীশের বাবার কষ্টের কথা শুনে এবং রেড্ডির দুর্দান্ত ইনিংসে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
উল্লেখ্য, গতকাল ম্য়াচের তৃতীয় দিনে একটা সময়ে ভারত যখন বিপদে ছিল, তখন অস্ট্রেলিয়ার চোখে চোখ রেখে সেঞ্চুরি করলেন নীতীশ কুমার রেড্ডি। ১৭১ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করেন নীতীশ রেড্ডি। প্রথম ইনিংসে ঋষভ পন্ত, রবীন্দ্র জাদেজার উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারত। ভারতীয় দল ২২১ রানের মাথায় ৭ উইকেট হারিয়ে বসে। তার পরেই ওয়াশিংটন সুন্দরকে সঙ্গে নিয়ে পালটা লড়াই শুরু করেন নীতীশ। তৃতীয় দিনের চায়ের বিরতির আগেই ১০০ রানের পার্টনারশিপ পূর্ণ করেন দু'জনে। শেষমেশ দলগত ৩৪৮ রানের মাথায় আউট হন ওয়াশিংটন সুন্দর। নীতীশ অবশ্য আজ সকালে আউট হন ১১৪ রানে।
এদিকে এই সেঞ্চুরির মাধ্যমে সফরকারী ব্যাটারদের মধ্যে সর্বকনিষ্ট হিসেবে ৮ নম্বরে নেমে অস্ট্রেলিয়ায় সেঞ্চুরি করার নজির গড়েন নীতীশ রেড্ডি। আট নম্বরে ব্যাট করতে নামা ভারতীয়দের মধ্যে দ্বিতীয় কনিষ্ট হিসেবে সেঞ্চুরি করেন নীতীশ। এদিকে অস্ট্রেলিয়ায় তৃতীয় কনিষ্ঠ ভারতীয় হিসেবে সেঞ্চুরি করেন নীতীশ রেড্ডি। তাঁর আগে শুধুমাত্র সচিন তেন্ডুলকর এবং ঋষভ পন্ত আছেন। এদিকে ৮ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে মেলবোর্নে টেস্টে সেঞ্চুরি করা প্রথম ব্যাটারও হয়েছেন নীতীশ রেড্ডি। এদিকে মেলবোর্নে টেস্টের ৭ নম্বরে বা তারও পরে ব্যাট করতে নেমে আর কোনও ব্যাটার এত কম বয়সে হাফ সেঞ্চুরিও করেননি। নীতীশ ভাঙেন কুম্বলের ১৬ বছর আগের রেকর্ড। ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অ্যাডিলেড টেস্টের প্রথম ইনিংসে আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে কুম্বলে ২০৫ বলে ৮৭ রান করে আউট হয়েছিলেন। এতদিন সেটাই ছিল অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এই নম্বরে কোনও ভারতীয়ের সেরা ইনিংস।