মহারাষ্ট্রের নাগপুর থেকে কলকাতায় আনা হচ্ছিল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত একাধিক অত্যাধুনিক ইনজেকশন। কিন্তু মাঝপথেই উধাও হয়ে গেল সেই জীবনরক্ষাকারী ওষুধ। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে চিকিৎসক মহল থেকে শুরু করে ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলিতে। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড রাজ্য কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছে, যাতে কালোবাজারের মাধ্যমে এই ইনজেকশন বাজারে ঢুকে না পড়ে।
আরও পড়ুন: 'ডায়াবিটিসের কেন্দ্রস্থল ভারত!' কোকা-কোলার আয় বৃদ্ধি, উদ্বিগ্ন জিরোধা সিইও
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজনীয় ইনসুলিন ও সেমাগ্লুটাইডের একাধিক ইনজেকশন চুরি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে প্রস্তুতকারক সংস্থা নোভো নরডিস্ক। চুরি যাওয়া ইনজেকশনের মধ্যে রয়েছে- ইনসুলিন ডেগলুডেক (Batch No: RT6GY96), ইনসুলিন অ্যাসপার্ট (Batch No: RR72648), ইনসুলিন অ্যাসপার্ট (Batch No: RP5P640), সেমাগ্লুটাইড ইনজেকশন ০.৫ এমজি (Batch No: RP5S233) ও সেমাগ্লুটাইড ইনজেকশন ০.২৫ এমজি (Batch No: RP5S232)।এগুলো টাইপ ওয়ান এবং টাইপ টু ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। প্রতিটি ইনজেকশনের বাজারমূল্যও অনেক বেশি। ফলে কালোবাজারে সহজেই চাহিদা তৈরি হতে পারে।
কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড জানিয়েছে, এই ইনজেকশনগুলিকে নির্দিষ্ট শীতল তাপমাত্রার মধ্যে সংরক্ষণ করতে হয়, সাধারণত ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সঠিক পরিবেশে না রাখলে ওষুধগুলির কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। ফলে যদি কালোবাজারে এগুলি রোগীদের হাতে পৌঁছায়, তবে চিকিৎসা ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি মারাত্মক শারীরিক জটিলতা তৈরি হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডকে পাঠানো চিঠিতে কেন্দ্রীয় সংস্থা জানিয়েছে, অবিলম্বে নজরদারি বাড়াতে হবে। বিশেষ করে ফার্মেসি, হাসপাতাল ও বাজারে যেন এই ব্যাচ নম্বরের কোনও ইনজেকশন বিক্রি না হয়, সেদিকে কঠোরভাবে নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যদি চুরি যাওয়া ইনজেকশন বাজেয়াপ্ত করা যায়, তবে ড্রাগস অ্যান্ড কসমেটিকস অ্যাক্ট, ১৯৪০ অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চুরির ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। কোন পর্যায়ে ওষুধগুলি উধাও হল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, পরিবহণের সময়েই কোনও সংগঠিত চক্র এই চুরির সঙ্গে জড়িত। কারণ শুধু সাধারণ চুরি নয়, ওষুধগুলির ধরন ও মূল্য বুঝে তবেই এভাবে নিশানা করা সম্ভব।