২০১৯ সালের ভোটের পর বলা হয়েছিল যে বামের ভোট গিয়েছে রামে। একথা মানতে চাননি সিপিএম নেতৃত্ব। কিন্তু এবার বামের ভোট কোথায় গেল? এবার এই প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছে। কার্যত এবারের লোকসভা ভোটে বামেদের অবস্থা আরও খারাপ। সেক্ষেত্রে বামেদের ভোট শেষ পর্যন্ত কারা টেনে নিল তা নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে।
এদিকে অনুমান করা হচ্ছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ তুলে যে বামেরা এতদিন গলা ফাটিয়েছে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের কৃপায় সেই বাম ভোটের একটা বড় অংশ তৃণমূলের দিকে চলে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজ্যের একাধিক জেলায় দেখা গিয়েছে যে বাম ভোটে ধস নেমেছে। সেক্ষেত্রে কোথায় গেল বাম ভোট?| তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।
এনিয়ে সিপিএমের অন্দরেও নানা চর্চা চলছে। সিপিএম নেতৃত্বের একাংশের মতে, আসলে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিল তৃণমূল। আবার বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলেছে সিপিএম। এনিয়ে কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে যান সিপিএমের কর্মীরা। হয়তো কিছুজনের মনে হয়েছে আগে বিজেপিকে তাড়াতে হবে। তৃণমূল চোর হলেও বিজেপিকে তাড়ানোর জন্য কেউ কেউ হয়তো তৃণমূলকে সমর্থন করেছেন।
পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক জায়গাতেও দেখা গিয়েছে বাম ভোটে একের পর এক ধস নেমেছে। মেদিনীপুরে দেখা গিয়েছে, তৃণমূল পেয়েছে ৪৭.৪০ শতাংশ ভোট, বিজেপি পেয়েছে ৪৫.৫৬ শতাংশ ভোট আর বামেরা পেয়েছে মাত্র ৩.৯০ শতাংশ ভোট। ২০১৯ সালের তুলনায় বামেদের ভোট কমে গিয়েছে। সেবার বামেদের ভোট ছিল ৪.৪২ শতাংশ।
আর এবার বামেদের ভোট কমে গিয়েছে অনেকটাই। সেবার বামেদের ভোটের ধারে কাছে যেতে পারেনি তারা। কিন্তু শুধুই বিজেপি বিরোধিতার জেরেই কি বামেদের ভোট চলে গেল তৃণমূলে?
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে চুরি দুর্নীতির নানা অভিযোগ। চাকরি সংক্রান্ত নানা বঞ্চনার অভিযোগ। তারপরেও সরাসরি বাংলার মহিলারা যে আর্থিক সুবিধা পেয়েছেন তাতেই ভোটের অঙ্ক পুরো ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। বাম আমলে এই ধরনের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো পরিস্থিতি ছিল না। সেকারণে লাল পতাকা নিয়ে হেঁটেও ইভিএমে ভোটটা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের দলকেই। এতেই ভোট বেড়েছে তৃণমূলের। আর ক্রমে হারিয়ে যেতে বসেছেন বামেরা।
সব মিলিয়ে আরও ক্ষয়িষ্ণু হয়ে গিয়েছে বামেরা। একটা আসনও পায়নি তারা। বিজেপিরও আসন সংখ্য়া কমে গিয়েছে। কিন্তু এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূুল।