কসবায় কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে হত্যা করার ছক বানচাল হলেও রাজ্য–রাজনীতি সরগরম হয়ে রয়েছে। কারণ এই ঘটনার পর কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আর তাঁকে সমর্থন করেছিলেন বর্ষীয়ান তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়। কিন্তু আজ, মঙ্গলবার সেখানে দেখা গেল কামারহাটির তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মদন মিত্রের বিপরীত অবস্থান। তিনি এই আবহে কলকাতা পুলিশের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সুতরাং সরাসরি ফিরহাদ–সৌগতকে সমর্থন করলেন না তৃণমূল কংগ্রেসের কালারফুল নেতা।
দলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়কে পিতামহ ভীষ্মের সঙ্গে তুলনা করেছেন মিত্র মদন। তার ফলে সব বিষয়টি নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। আজ সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে মদন মিত্র বলেন, ‘নেতার বাড়ির বাজার থেকে মিছিল সামলানো, সবই তো সামলাতে হচ্ছে কলকাতা পুলিশকে। তাহলে ওরা নিজেদের কাজটা করবে কখন? কলকাতা পুলিশ ওভারলোডেড। ইন্টেলিজেন্সে আরও লোক বাড়ালে ভাল হয়। সৌগত দা আমার নেতা। বয়স্ক সৌগত দা এখন দ্রোণাচার্য, পিতামহ ভীষ্মের মতন লেভেলে চলে গিয়েছেন। তাঁকে তো আমার মেনে চলতেই হবে।’
আরও পড়ুন: আবাস যোজনার টাকা কবে আসবে উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে? বড় ঘোষণা রাজ্য সরকারের
কসবায় ভরসন্ধ্যায় গত শুক্রবার ফিল্মি কায়দায় কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে হত্যার চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। তাতেই জোর আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। তখন কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলে দেন ফিরহাদ হাকিম। মেয়র বলেছিলেন, ‘এনাফ ইজ এনাফ! হোয়ার ইজ দ্য নেটওয়ার্ক? মুখ্যমন্ত্রী বলার পরও বাইরে থেকে আগ্নেয়াস্ত্র আসছে কেমন করে?’ ফিরহাদের এই মন্তব্যকে সমর্থন করে সৌগত রায় বলেছিলেন, ‘সুশান্তর ওপর হামলার ঘটনা আসলে পুলিশেরই ব্যর্থতা। পুলিশ সঠিকভাবে কাজ করছে না।’ সেখানে পুলিশের উপর চাপ বেড়েছে বলে দাবি করলেন মদন মিত্র। সেক্ষেত্রে এই ঘটনা নিয়ে আড়াআড়িভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ল তৃণমূল কংগ্রেস বলে মনে করা হচ্ছে।
সুশান্ত ঘোষের সঙ্গে যা ঘটতে যাচ্ছিল সেটা নিয়ে এখন বেশ আতঙ্কে আছেন কলকাতা পুরসভার বহু কাউন্সিলর। তাঁরা আবার মেয়রের কাছে নিরাপত্তার দাবি করে বসেছেন। এই আবহে আজ সাংবাদিকরা কসবার ঘটনা নিয়ে মদন মিত্রের মতামত জানতে চান। তখনই কামারহাটির তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কের বক্তব্য, ‘সৌগত রায়ের সিকিউরিটির কাজ সৌগতদাকে নিরাপত্তা দেওয়া, কিন্তু তাকে দিয়ে কী কী কাজ করানো হয়। সৌগত দা কি সেটা জানেন? বাজার করানো থেকে চুন, পান, রান্না, তাহলে সে সৌগত দার সিকিউরিটি দেবে কখন? আবার কলকাতা পুলিশকে চাকরি চুরি, ছাত্রদের দাবি, কে ঘর বানিয়েছে, তারপরে ট্যাব, কার বিয়ে ভেঙে গিয়েছে, কে কোথায় কমিশন খেয়েছে এখন সবকিছুর তদন্ত করতে হচ্ছে। কলকাতা পুলিশ সময় পেলে কাজ করে দেখিয়ে দিতে জানে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে দেখিয়ে দিয়েছিল। কলকাতা পুলিশ আজকে যা বলে সিবিআই ৭৬ দিন পরে তাই বলে। সেটাও দেখলাম।’