টানা দু'দিন এবং দুই রাত অফিসে কাটানোর পর অবশেষে ঘেরাওমুক্ত হলেন স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। বুধবার (২৩ এপ্রিল, ২০২৫) সকালে তাঁকে সল্টলেকের এসএসসি কার্যালয় - আচার্য সদন থেকে বেরোনোর 'অনুমতি' দিলেন দফতরের সামনেই ধরনায় বসে থাকা চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষক শিক্ষিকারা।গত সোমবার (২১ এপ্রিল, ২০২৫) অফিসে এসেছিলেন সিদ্ধার্থ। তার আগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষকদের কথা দেওয়া হয়েছিল - খুব সম্ভবত সোমবার সন্ধের মধ্যেই যোগ্য ও অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। কিন্তু, বাস্তবে তেমনটা করা হয়নি। প্রতিবাদে এসএসসি কার্যালয় লাগাতার ঘেরাও করে রাখেন আন্দোলনকারীরা। ফলত, অফিসের ভিতরেই 'বন্দি' হয়ে যান সিদ্ধার্থ ও তাঁর সহকর্মীরা।শুধু তাই নয়, অভুক্ত আন্দোলনকারীরা প্রাথমিকভাবে এসএসসি ভবনে খাবার ঢুকতেও বাধা দেন। এই প্রেক্ষাপটে অবশেষে এসএসসি কার্যালয় থেকে বেরোতে পারলেন সিদ্ধার্থ। কিন্তু, কেন তাঁকে বেরোতে দিলেন আন্দোলনকারীরা?কারণ, আজ (বুধবার - ২৩ এপ্রিল, ২০২৫) কলকাতা হাইকোর্টে এসএসসি সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি রয়েছে। সেই শুনানিতে চেয়ারম্য়ানকে সশরীরে হাজির থাকতে হবে। সূত্রের দাবি, এই কারণেই এদিন আর চেয়ারম্যানকে অফিস থেকে বেরোতে বাধা দেননি আন্দোলনকারীরা।সংবাদমাধ্যমে উঠে আসা তথ্য অনুসারে, গত দু'দিনের বেশির ভাগ সময়টাই শুধুমাত্র ক্রিমক্র্যাকার বিস্কুট, মিনারেল ওয়াটার এবং নুন চিনির জল খেয়ে কাটে সিদ্ধার্থের। পরে বিষয়টিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি অনীশ সরকার।তিনি চাকরিহারা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের বোঝান, এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার একজন ৬৫ বছরের বৃদ্ধ। তাই মানবিকতার খাতিরে এবং মানবাধিকার রক্ষার প্রশ্নেও তাঁর জন্য খাবার, পানীয় জল ও ওষুধ পাঠাতে দেওয়া হোক। আন্দোলনকারীরাও এই যুক্তি অস্বীকার করেননি।এরপর ঘেরাও চললেও এসএসসি ভবনের ভিতর আন্দোলনকারীরা খাবার, পানীয় জল ও ওষুধ ঢোকার বিষয়ে কোনও বাধা দেননি। আর, অবশেষে বুধবার সকালে শুধুমাত্র আদালতে হাজিরা দিতে দেওয়ার জন্য এসএসসি চেয়ারম্যানকে তাঁর অফিস থেকে বেরোতে দেওয়া হল।প্রসঙ্গত, সোমবারের পর মঙ্গলবারও এসএসসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা বৈঠক করেন। কিন্তু, সেই বৈঠকেও আন্দোলনকারীরা সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তাই তাঁরা তাঁদের ঘেরাও কর্মসূচি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পাশাপাশি, আজ আদালতে কী হয়, সেদিকেও তাঁদের নজর রয়েছে।