আরজি কর কাণ্ডে শিয়ালদা আদালতে দু’দিন আগে তৃতীয় ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ দেয় সিবিআই বলে খবর। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, নতুন করে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের উল্লেখ করা হয়েছে ওই স্টেটাস রিপোর্টে। আর নজরে রাখা হয়েছে ২০০টি ভিডিয়ো ক্লিপের উপরও। ইতিমধ্যেই আরজি কর কাণ্ডে মূল অভিযুক্তই দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজাও দিয়েছে শিয়ালদা আদালত। কিন্তু এখনও এই মামলায় বহু প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট।
আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল। তার জেরে গোটা রাজ্যে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছিল। রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপে সেই আন্দোলন থেমে গেলেও মামলা এখনও চলছে। এখনও পর্যন্ত এমন কিছু প্রশ্ন রয়েছে, যার কোনও উত্তর সিবিআই দিতে পারেনি। ইতিমধ্যেই আদালতে তিন পাতার স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিয়েছিল সিবিআই। তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, নতুন ২৪ জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। হাসপাতালের কিছু জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ জোগাড় করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নতুন করে তিনজনের কল ডিটেলস পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে আগের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল। মৃতার পরিবার এই তদন্তে খুশি নয়।
আরও পড়ুন: কোচিং সেন্টার লক্ষ্য করে বোমাবাজি চলল সামশেরগঞ্জে, আক্রান্ত দুই কিশোর পড়ুয়া
কোন প্রশ্নগুলির উত্তর মেলেনি? আদালত সূত্রে খবর, এক, নির্যাতিতার উচ্চতা ছিল ৫ ফুট ১ ইঞ্চি। সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনার সময়—৪টে ৩ মিনিট থেকে ৪টে ৩৮ মিনিট। তখন কি ওই আঘাতগুলি করা যায়? দুই, সেমিনার হলের পাশের ঘরের দেওয়াল কেন ভাঙা হয়েছিল? আসল উদ্দেশ্য কি ছিল? তিন, করিডরে প্রথম যে রুম ভাঙা হয়েছিল সেখানে দুটি দরজাও ভাঙা ছিল। একজন ব্যক্তি ভিতরে প্রবেশ করল এবং বেরিয়ে গেল কারও নজরে এল না? চার, একজনের পক্ষে কি এই কাজ করা সম্ভব? নির্যাতিতা কি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেনি? সিবিআই চার্জশিটে উল্লেখ করেছে, অভিযুক্ত মদ্যপ অবস্থায় ছিল।
এছাড়া কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির বক্তব্য, এই মামলার বিচার নিম্ন আদালতে চলেছে। এটা অস্বীকার করা যায় না। ট্রায়াল কোর্টে চার্জ ফ্রেম করা হয়েছে। একজনকে সেখানে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। চার্জ গঠনের সময়ের ভাষা জানা নেই। তাই পুনরায় তদন্ত করার জন্য তথ্য দরকার। তাই সিবিআইয়ের থেকে রিপোর্ট তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেখানে সমস্ত তথ্য তুলে ধরতে হবে। যে প্রশ্নগুলি অত্যন্ত জানা দরকার এই ক্ষেত্রে। আগে সিবিআইয়ের তদন্তে খুশি হতে পারেননি নির্যাতিতার পরিবার বলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তাঁরা। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৬ মে।