রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এবার নয়া নির্দেশিকা জারি হয়েছে। আর তা হল, রাজ্য সরকারের কোনও দফতর নিজেদের মতো করে লোকসভার পাঠানো প্রশ্নের উত্তর তৈরি করে সরাসরি পাঠিয়ে দিতে পারবে না। এবার থেকে তার জন্য প্রয়োজন ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ’–এর অনুমোদন। এই নির্দেশ জারি করেছে রাজ্য সরকার। এমনকী সব দফতরের সচিবদের কাছে এই নির্দেশ চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।কিন্তু কেন এই নির্দেশ? মুখ্যসচিবের চিঠি সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভার পাঠানো প্রশ্নের উত্তর সময়মতো তৈরি হচ্ছে না। সেটা লক্ষ্য করেছে নবান্ন। তাই নবান্নের নির্দেশ, লোকসভার পাঠানো প্রশ্নের জবাব নির্ধারিত সময়ের আগেই তৈরি করে ফেলতে হবে। খসড়া উত্তর পাঠাতে হবে মুখ্যসচিবের কাছে। তাঁর অনুমোদন পেলেই তা পাঠাতে হবে লোকসভায়। কোনও কোনও বিষয়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকেও সেই অনুমোদন নেওয়া হতে পারে।নবান্ন সূত্রে খবর, একুশের নির্বাচনের আগে কেন্দ্র–রাজ্যের মধ্যে বিস্তর টানাপোড়েন চলেছিল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসার পরে সেই টানাপোড়েন আরও বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে নানা বিষয় তুলে রাজ্যের উপর চাপ বাড়িয়ে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। গোটা বিষয়টির পেছনে রাজনীতি আছে বলে মনে করে কড়া হচ্ছে রাজ্য সরকারও। তাই বাড়তি সতর্ক থাকতে হচ্ছে।জানা গিয়েছে, লোকসভার অধিবেশনে কোনও সাংসদ যে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করবেন, তার উত্তর সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে জানতে চাওয়া হয়। তখন মন্ত্রী ও সচিবের অনুমোদন নিয়ে আগে তা পাঠানো হতো লোকসভায়। কিন্তু ইদানিং দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে রাজ্যের দেওয়া অনেক তথ্য মিলছে না। আবার কেন্দ্র যে তথ্য দেয় তা রাজ্যের সঙ্গে মেলে না। ফলে একটা টানাপোড়েন তৈরি হয়। এমনকী কেন্দ্রের দেওয়া তথ্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই।এবার আরও কড়াভাবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ‘বঞ্চনা’র অভিযোগ এবং রাজ্যের ‘সাফল্য’ তুলে ধরতে চাইছে নবান্ন। তাই এবার থেকে লোকসভায় রাজ্যের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দফতরের যে উত্তর যাবে, তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের পরই পাঠানো হবে। তথ্যগত বিভ্রান্তি এড়াতে এই পদ্ধতি নেওয়া হয়েছে। যা মানতে বলা হয়েছে সব দফতরকেই।