অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ব্যবহার করে ‘তোলাবাজি’ করার অভিযোগে ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই মামলায় জেরা করার জন্য শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ এবার কিড স্ট্রিটে এমএলএ হস্টেলের সুপার সুশান্ত মণ্ডলকে তলব করল। হস্টেল সুপারের কাছে সেই মর্মে নোটিশও পাঠানো হয়েছে। বিজেপি বিধায়কের সুপারিশেই এমএলএ হস্টেল থেকে গ্রেফতার হওয়া তিন তোলাবাজকে ঘর দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। ওখানের অফিশিয়াল রেকর্ড থেকেই এটা জানা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। আর গোটা বিষয়টি নিয়ে এমএলএ হস্টেলের সুপারিনটেনডেন্টকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে।
এই ঘটনায় এখন এমএলএ হস্টেলের সুপার সাঁড়াশি চাপে পড়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তকারী অফিসার এমএলএ হস্টেলের রেজিস্টার খাতা এখন বাজেয়াপ্ত করেছেন। জেরা পর্বে সেই রেজিস্টার খাতা পুলিশ সামনে রাখবে সুপারের। আর তারপর এমএলএ হস্টেলের সুপারের কাছে জানতে চাওয়া হবে, তোলাবাজি কণ্ডে মূল অভিযুক্ত হুগলির বাসিন্দা জুনেদুল হক চৌধুরী কোচবিহার দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে’র কোটায় রুম বুক করলেন কেমন করে? বুকিংয়ের নেপথ্যে বিজেপি বিধায়কের ঠিক কী ভূমিকা ছিল? হস্টেল সুপারকে জবাব দিতে হবে।
আরও পড়ুন: ‘ইটস রিয়েলি স্যাড’, বাংলার দুটি ঘটনা শুনে বলেছিলেন মনমোহন সিং, কী সেগুলি?
আবার কালনা পুরসভার চেয়ারম্যানকে ওখান থেকেই হুমকি দিয়ে ৫ লক্ষ টাকা তোলা চাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। পার্ক স্ট্রিটের এমএলএ হস্টেল থেকে বৃহস্পতিবার তিনজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। গ্রেফতার করার সময় তারা বিজেপি বিধায়কের ঘরেই ছিল। এমএলএ হস্টেলে কোচবিহারের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে’র ঘরটি তারা বুক করেছিল বলে তোলাবাজরা জেরায় স্বীকার করেছে। বুকিং করতে ব্যবহৃত বিজেপি বিধায়কের সুপারিশপত্র–সহ অন্যান্য নথিও বাজেয়াপ্ত করতে চাইছে কলকাতা পুলিশ। বিজেপি বিধায়কের অবশ্য বক্তব্য, ‘পুলিশ ডাকলে অবশ্যই যাব। তদন্তে সহযোগিতা করব। বিধায়ক হিসেবে এটা আমার কর্তব্য।’
এছাড়া জুনেদুল এবং অন্য অভিযুক্তদের মোবাইলের ‘কল ডিটেইলস রিপোর্ট’ বিশ্লেষণ করছে পুলিশ। কারণ বিধায়কের বক্তব্য আর নথির মধ্যে ফারাক আছে। কিন্তু নথি আর তোলাবাজদের বক্তব্যে মিল আছে। সেক্ষেত্রে নথি জাল করে এই কাজ করা হয়েছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই বিষয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘একজন বিজেপি বিধায়কের সুপারিশেই ঘর দেওয়া হয়েছিল। এমএলএ হস্টেলের অফিসিয়াল রেকর্ড থেকে জানতে পেরেছি। যাঁকে ঘর দেওয়া হয়েছিল তাঁর নাম, আধার কার্ড নম্বর সব রেকর্ড করা হয়েছে। কেউ যদি অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ভিতরে ঢুকে থাকে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’