এবার এক মাদকাসক্তের জ্বালায় তোলপাড় কাণ্ড ঘটছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, পড়ুয়ারা চিঠি লিখতে বাধ্য হয়েছেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তকে। এই মাদকাসক্তের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে আবাসিক পড়ুয়ারা মাঝেমধ্যে গৃহবন্দি হয়ে থাকছেন। এমনকী ওই মাদকাসক্তকে ধরতে গেলে তিনি চিলেকোঠার ঘর বা অন্য কোথাও গা–ঢাকা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। তখন তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে এখন এই ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? আবাসিক পড়ুয়াদের দাবি, ওই মাদকাসক্ত প্রচণ্ড বিরক্ত করছেন। যখন তখন রুমে এসে তাণ্ডব করছেন। জানালা দিয়ে কখনও উঁকিঝুঁকি মারছেন। এমনকী মুখ ভেঙিয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। আবার টাকা দাবি করছেন। আর না দিলে চিৎকার জুড়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। ঘরের জিনিসপত্র ফেলে দিয়ে তাণ্ডব করছেন ওই মাদকাসক্ত বলেও অভিযোগ। তাই এই মাদকাসক্তকে অবিলম্বে হস্টেল থেকে বের করে দিতে আর্জি জানানো হয়েছে। ওই মাদকাসক্ত কখনও হস্টেলের ছাদে চিলেকোঠার ঘরে লুকিয়ে পড়ছেন অথবা কোথাও পালিয়ে যাচ্ছেন। তাই সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: হাওড়া ব্রিজের কাছে স্ট্র্যান্ড রোডে বিধ্বংসী আগুন, ফুলের বাজার বাঁচাতে পাঁচটি ইঞ্জিন
কে এই মাদকাসক্ত ব্যক্তি? মেন হস্টেলের বি ব্লকের আবাসিকদের সূত্রে খবর, বহুদিন ধরেই এখানে থাকেন ওই ড্রাগ অ্যাডিক্ট বা মাদকাসক্ত ব্যক্তি। এই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু বছর আগে পিএইচডি করতেন তিনি। তারপর পড়াশোনা শেষ করে নেশার পথে পা বাড়ান। এখন পড়াশোনার সঙ্গে তাঁর আর কোনও যোগাযোগ নেই। তবু এই মাদকাসক্ত ব্যক্তি হস্টেলেই থাকছেন। প্রত্যেকদিনই মদ–মাদক খেয়ে মাদকাসক্ত ব্যক্তিটি হস্টেলে এসে তাণ্ডব চালান বলে অভিযোগ। ধরতে গেলেই দৌড়ে চিলেকোঠার ঘরে ঢুকে পড়েন। এই ঘটনায় তিতিবিরক্ত আবাসিক পড়ুয়ারা।
আর কী জানা যাচ্ছে? এই আবহে মাদকাসক্তের থেকে মুক্তি পেতে শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টস হস্টেলে গিয়ে ওই মাদকাসক্তের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু সেখানে সব শুনে নিজের কোনও দাবি জানাননি ওই নেশারু ব্যক্তি। ফলে গোটা পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত জানান, এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ২০২৩ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে র্যাগিংয়ের জেরে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যু হয়েছিল। এই ঘটনা রাজ্য–রাজনীতিতে সাড়া ফেলে দিয়েছিল। ওই ঘটনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বহিরাগত এবং প্রাক্তনীদের হস্টেলে থাকতে দেওয়া হবে না। তারপরও একজন মাদকাসক্ত কেমন করে থেকে গেল? উঠছে প্রশ্ন।