গলফগ্রিনে মহিলার কাটা মুন্ডু উদ্ধারের ঘটনায় বাকি দেহাংশের খোঁজ মিলল। জানা গিয়েছে, রিজেন্ট পার্ক এলাকা থেকে শরীরের বাকি দুটি অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে মুন্ডু উদ্ধারের ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই একজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ধৃত ব্যক্তির নাম আতিকুর লস্কর। এদিকে জানা যায়, নিহত মহিলার নাম খাদিজা বিবি। এই আবহে তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের দাবি, ধৃত আতিকুর নিহত খাদিজার জামাইবাবু। পুলিশের অনুমান, শ্যালিকাকে প্রেম নিবেদন করে প্রত্যাখাত হয়েছিলেন আতিকুর। পরে জামাইবাবুকে ফোনে ‘ব্লক’ করেছিলেন খাদিজা। এর সেই কারণেই নাকি রোষের থেকে শ্যালিকাকে খুন করে আতিকুর। (আরও পড়ুন: আরজি করের আটতলার ঘর কেন সিল করা হয়েছে? ফের মিলছে রহস্যের গন্ধ)
আরও পড়ুন: গ্রেফতার ৪, সুনামগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনায় অবশেষে পদক্ষেপ পুলিশের
পুলিশ জানিয়েছে, যেখান থেকে মহিলার কাটা মুন্ডু উদ্ধার হয়েছে, শুক্রবার ভোরে সেখানেই আতিকুরের গতিবিধির প্রমাণ মিলেছে। তদন্তের স্বার্থে সিসিটিভি ও টাওয়ার লোকেশন ব্যবহার করে পুলিশ। এই আবহে কলকাতা লাগোয়া পুলিশ জেলা এবং কমিশনারেটগুলিতে আতিকুরের ছবি পাঠনো হয়েছিল কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে। এরপরই ডায়মন্ড হারবার পুলিশ আতিকুরকে চিহ্নিত করে। আতিকুরের ফোন নম্বর থেকে টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখা হয়। নিশ্চিত হওয়া যায়, শুক্রবার ভোরে গলফগ্রিনের সেই এলাকাতেই ছিল আতিকুর। এরপরই অভিযান চালিয়ে আতিকুরকে ধরেছে পুলিশ। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ভোট কবে? বড় পরিকল্পনার কথা ইউনুসের উপদেষ্টার মুখে, মন্তব্য ভারত নিয়েও)
জানা গিয়েছে, ধৃত আতিকুর লস্কর দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটের বাসকভাঙা পঞ্চগ্রামের বাসিন্দা। এদিকে নিহত খাদিজা বিবি মুড়াগাছা কালীতলা পারুল গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। খাদিজার বিয়ে হয়েছিল মগরাহাটের রাধানগর গ্রামে। ধৃত আতিকুরকে জেরা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। অপরদিকে নিহত মহিলার পরিবারের সঙ্গেও কথা বলছেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার কলকাতায় কাজে এসেছিলেন খাদিজা এবং আতিকুর। বিকেলে খাদিজাকে জামাইবাবু জানান, খাওয়াদাওয়া করে তাঁরা বাড়ি ফিরবেন। পরে তাঁদের মধ্যে বচসা হয়। সেই সময় খাদিজাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন আতিকুর। পরে শ্যালিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন আতিকুর। এরপর খাদিজার দেহের তিন টুকরো করে বস্তায় ভরে ফেলে দেন জামাইবাবু।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সকাল ৭টা নাগাদ একটি ময়লার স্তূপ পরিষ্কার করছিলেন সাফাইকর্মীরা। সেই সময় এক প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়া একটি মুন্ডু দেখতে পান তাঁরা। প্রথমে তাঁরা সেই মুন্ডুটিকে নকল বলে মনে করেছিলেন। পরে প্লাস্টিকের মুখ ফাঁক করতেই রক্ত দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় থানায়। পুলিশ আধিকারিরা পৌঁছন ঘটনাস্থলে। পৌঁছন ডেপুটি কমিশনার বিদিশা কলিতা। পুলিশের নজর এড়িয়ে অভিজাত এলাকায় কীভাবে একজন মুন্ডু ফেলে দিয়ে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তবে মুন্ডু উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই এই ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উদ্ধার হয় নিহতের বাকি দেহাংশও।