বাংলাদেশে কবে হতে পারে নির্বাচন? এই প্রশ্ন এখন ঘুরঘুর করছে অনেকেরই মনে। এই আবহে নির্বাচন ইস্যুতে মুখ খুললেন বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। গতকাল এই নিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য হল, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। তিনি বলেন, 'নির্বাচন যে হবে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। আমাদের প্রথম কাজ হল, দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা। আমরা মৌলিক সংস্কারের পথ প্রশস্ত করে নির্বাচন আয়োজন করব, যাতে কোনও সরকার সে পথ থেকে বিচ্যুত হতে না পারে।'
বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের উপদেষ্টার কথায়, 'যারা অত্যাচারী শাসকের পতন ঘটিয়েছেন, তাঁদের কিছু দাবি আছে। তাঁরা সংস্কার চাইছেন, এবং সেই দাবি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আমাদের।' এই আবহে তিনি দাবি করেন, এসব সংস্কারের জন্য সময় লাগবে এবং সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান তৌহিদ। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি তাঁর আহ্বান, ভবিষ্যতে আর এমন কাজ করবেন না, যাতে ছাত্রদের ফের রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হয়। এদিকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তৌহিদ বলেন, 'আমরা সব দেশের সাথেই সম্মান ও সমতার ভিত্তিতে সুসম্পর্ক চাই। সেই লক্ষ্যেই এই সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ভারতকে আমরা স্পষ্ট বার্তা দিয়েছি, আমরা ভালো সম্পর্ক চাই। তবে সেটা দুপক্ষেরই স্বার্থের ভিত্তিতে হতে হবে।'
শেখ হাসিনার বিদায়ের পরে বাংলাদেশে গঠন হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সরকারের মাথায় বসেন নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনুস। তবে তিনি ক্ষমতায় আসার পরও বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেনি। এরই মাঝে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক হিংসা বেড়েছে। বিভিন্ন দেশে সমালোচিত হচ্ছে ইউনুসের সরকার। এই আবহে সম্প্রতি সর্বদল বৈঠক করেছিলেন ইউনুস। জল্পনা শুরু হয়েছে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে।
এই আবহে সম্প্রতি সম্ভাব্য নির্বাচন নিয়ে মুখ খুলেছিলেন সেই দেশের পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি দাবি করেছিলেন, আগামী বছর নির্বাচিত সরকার দেখা যাবে। এর আগে অবশ্য গত ২৪ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দাবি করা হয়েছিল, আগামী নির্বাচন কবে হবে, তা প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হবে। এ নিয়ে বাকি যাঁরা কথা বলছেন, সেগুলো তাঁদের ব্যক্তিগত মতামত।
উল্লেখ্য, বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠে আসছে। হাসিনার বিদায়ের পর থেকেই মন্দির থেকে শুরু করে হিন্দুদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চলেছে। সেই সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা থেকে বিএনপি-জামাত দেখেছিল 'আওয়ামি লিগের ষড়যন্ত্র'। তবে কয়েক মাস যাওয়র পর সেই দেশে হিন্দুদের অবস্থা যেন আরও খারাপ। ধর্মের নামে চাকরি থেকে জোর করে পদত্যাগ করানো হচ্ছে সংখ্যালঘুদের। অনেককে ধর্মান্তরিত করানোর অভিযোগও উঠেছে। এরই মাঝে চট্টগ্রামে হিন্দু এবং বৌদ্ধদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই আবহে ইউনুসের সরকারের সমালোচনা হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। আর এর মধ্যেই দেখতে দেখতে এই সরকারের মেয়াদ নিয়ে জল্পনা বেড়েছে। যদিও এই সরকারের বিদায়ের আপাতত কোনও ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না।