কসবায় ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে লাল-নীল বাতির গাড়ি ব্যবহার নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট। নীল বাতি লাল বাতির গাড়ি ব্যবহার নিয়ে রাজ্যকে হলফনামা পেশের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে ভ্যাকসিন জালিয়াতির তদন্তের কতদূর অগ্রগতি হয়েছে, তা নিয়েও হলফনামা পেশের নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী শুক্রবার রাজ্য সরকারকে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট হলফনামার আকারে পেশের নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।বুধবার ভুয়ো ভ্যাকসিন মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেন। সরকারি আইনজীবীকে ধমক দেন বিচারপতি। তিনি প্রশ্ন তোলেন যে, গাড়িতে নীল বাতি লাল বাতি জ্বালানো নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের যে আইন রয়েছে, রাজ্য তা মানছে না কেন? একইসঙ্গে ভ্যাকসিন জালিয়াতি কাণ্ডের এখনও পর্যন্ত তদন্তের কি অগ্রগতি হয়েছে, রাজ্যের কাছে তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট।ক্ষুব্ধ আদালত এদিন আরও প্রশ্ন তোলে যে, গাড়িতে নীল বাতি লাল বাতি জ্বালিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় যুগ্ম কমিশনার সেজে কীভাবে এতদিন কেউ ঘুরে বেড়াল? কলকাতা পুরসভার কমিশনার তখন কী করছিলেন? তিনি কি চিনতে পারলেন না?’ এই ভাষাতেই এ দিন রাজ্যকে ধমক দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল। শুধু তাই নয়, কারা কারা নীল-লাল বাতির গাড়ি ব্যবহার করছেন, সেই সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট হলফনামার আকারে ২ জুলাইয়ের মধ্যে আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।প্রসঙ্গত, ভুয়ো আইএএস পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে নীল বাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেরিয়েছিল ভ্যাকসিন প্রতারণার ‘মাস্টার মাইন্ড’ দেবাঞ্জন দেব। সেক্ষেত্রে একজন ভুয়ো ব্যক্তি কীভাবে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে এই কাণ্ড ঘটাল। তাহলে কি রাজ্য নীল বাতি লাল বাতি ব্যবহারের সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন মানছে না? এই নিয়েই এদিন প্রশ্ন তুলেছে হাইকোর্ট।পাশাপাশি এই ধরনের গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে রাজ্য কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে, তারও বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে আদালত। ২ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।উল্লেখ্য, আইনজীবী সন্দীপন দাস প্রথম এই জনস্বার্থ মামলা করেন। সেই মামলায় মূলত দু'টি আবেদন করা হয়। বর্তমানে যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকার টিকা দিচ্ছে, তাই এ ক্ষেত্রে সিবিআইকে দিয়ে তদন্তের আবেদন জানানো হয়েছে। অন্য দিকে, জাল টিকাকরণ রুখতে আদালতের তরফে একটি গাইডলাইন দেওয়ারও অনুরোধও জানানো হয়েছে।এখনও পর্যন্ত ভুয়ো টিকা নিয়ে মোট তিনটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছে হাইকোর্টে। সোমবার এই মামলা দায়ের করেন বিজেপি যুব-মোর্চার রাজ্য সহ সভাপতি তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। ভুয়ো ভ্যাকসিন দেওয়ার অভিযোগে সিবিআই তদন্তের দাবি চেয়ে এই মামলা করেছেন তিনি। ওই ঘটনায় কলকাতা পুলিশের তদন্তে স্থগিতাদেশও চেয়েছেন তিনি। এই একই ইস্যুতে আইনজীবী তাপস মাইতি একটি জনস্বার্থ মামলা করেন।