২০১১ সালের আগে থেকে শুভেন্দু অধিকারী সিপিএমের বিরুদ্ধে নানা কথা বলে আসছেন। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরও সিপিএমকে তিনি আক্রমণ করেছিলেন। এই দুই সময়ে সিপিএমকে আক্রমণ করা বা গালিগালাজ করার দু’রকম কারণ ছিল। এক, সিপিএমকে হারিয়ে রাজ্যের ক্ষমতায় আসা। দুই, বিরোধী সিপিএমকে কোণঠাসা করা। এই কাজ শুভেন্দু অধিকারী চালিয়েছিলেন ২০১৯ সাল পর্যন্ত। তারপর সিপিএম রাজনীতির ফ্রেমের বাইরে চলে যাওয়ায় উঠে আসে বিজেপি। শুরুতে বিজেপিরও কড়া সমালোচনা করেছিলেন তিনি। পরে সেই বিজেপিতেই যোগ দেন। এখন বিরোধী দলনেতার পদে থেকেও সিপিএমকে আক্রমণ করছেন তিনি।
এখন সিপিএমকে গালিগালাজ করার কারণ কী? এই প্রশ্ন এখন রাজ্য–রাজনীতিতে ঘুরপাক খাচ্ছে। মুর্শিদাবাদের হিংসায় মারা যান হরগোবিন্দ দাস এবং চন্দন দাস। তাঁদেরকে কর্মী বলে দাবি করেছিল সিপিএম। সামশেরগঞ্জে ছুটে গিয়েছিলেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। তখন শুভেন্দু অধিকারী নিহত দু’জনের ‘হিন্দু’ পরিচয়কে বড় করে সামনে এনে বলেছিলেন, ‘ওঁরা হিন্দু বলেই ওঁদের মেরে ফেলা হয়েছে।’ তারপর কৃষকসভার নেতৃত্বে সিপিএমের নেতাদের ব্রিগেড সমাবেশে বিজেপির সমাবেশের থেকে বেশি ভিড় হয়েছিল বলে অনেকের দাবি। তখন এই ব্রিগেড সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলনেতার বক্তব্য ছিল, ‘মাঠ ফাঁকাই ছিল। আমি ধন্যবাদ জানাব, হিন্দুরা ওই সভায় যাননি।’
আরও পড়ুন: মাঝরাতে ভাইয়ের হাতে দাদা খুন ক্যানিংয়ে, অভিযুক্ত পলাতক, তদন্ত শুরু করল পুলিশ
সিপিএমকে এভাবে আক্রমণ করার দুটি কারণ রয়েছে। এক, সিপিএম ধর্মনিরপেক্ষ দল বলেই রাজ্য–রাজনীতিতে পরিচিত। সেটা ভাঙতে পারলেই আখেরে ভোটবাক্স স্ফিত হবে। দুই, সিপিএম এখনও রাজ্য–রাজনীতিতে শূন্য হলেও ধীরে ধীরে বিজেপিতে যাওয়া ভোটব্যাঙ্ক ফেরাতে শুরু করেছে। সেটা ঠেকাতে গেলে সিপিএমকে আক্রমণ করা ছাড়া গতি নেই। সম্প্রতি পহেলগাঁওয়ে ২৬ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। তার জবাবে অপারেশন সিঁদুর অভিযান চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। তখন সিপিএম সেনাবাহিনীর পাশে থাকলেও কেন্দ্রীয় সরকারের নানা ইস্যুতে সরব হয়। তারপরই সিপিএমের দৈনিক মুখপত্রকে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, ‘ওই কাগজ কেউ পড়ে না। ঝালমুড়ির ঠোঙা হিসাবেও ব্যবহার করা হয় না। পোষ্যের বিষ্ঠা পরিষ্কার করতে কাজে লাগে।’