শান্তিনিকেতনে মেলা প্রাঙ্গনকে পাঁচিল দিয়ে ঘেরার পরিকল্পনার জন্য বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কড়া সমালোচনা করলেন বাংলার বুদ্ধিজীবীরা। একই সঙ্গে, হিংসা ছড়িয়ে পাঁচিল ভাঙার বিরুদ্ধেও তাঁরা প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। কবি শঙ্খ ঘোষ স্বাক্ষরিত পশ্চিমবঙ্গের মোট ২৭ জন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীর সম্মিলিত প্রতিবাদপত্রের মূল দাবি, ‘দুটি ঘটনাই রবীন্দ্রনাথের আশ্রমকে কাদাভরা মল্লভূমিতে পরিণত করেছে।’প্রতিবাদপত্রে শঙ্খ ঘোষ ছাড়াও সই করেছেন ছবি পরিচালক তরুণ মজুমদার, নাট্যকার রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, বিভাস চক্রবর্তী ও মনোজ মিত্র, অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের স্বনামধন্যরা। উল্লেখ্য, এই প্রথম বাংলার একমাত্র কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে সাম্প্রতিক ঘটনাপঞ্জী নিয়ে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানালেন বুদ্ধিজীবীরা। প্রতিবাদপত্রে জানানো হয়েছে, ‘বিশ্বভারতীতে শান্তি ও স্থিতি ফিরিয়ে আনতে পারে শুধুমাত্র শুভবুদ্ধি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা।’ গত সোমবার বিশ্বভারতীর পাঁচিল দেওয়া কেন্দ্র করে হিংসার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে সিবিআই তদন্ত দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দা তথা বিধায়ক নরেশ বাউরি-সহ তিন তৃণমূল নেতার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ওই দিনের বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পালটা অভিযোগ জানিয়েছেন বিশ্বভারতী উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে বীরভূম জেলার পুলিশ।বুধবার জেলা পুলিশের কাছে ঘটনায় দায়ের করা সমস্ত অভিযোগ ও এফআইআর-এর প্রতিলিপি চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট। বিক্ষোভ সংগঠনের জন্য কোনও রকম অর্থব্যয় করা হয়েছে কি না এবং সে ক্ষেত্রে অর্থের উৎস সম্পর্কেও জানতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। মেলা মাঠের দখল পেতে টাকা ছড়ানো হচ্ছে কি না, সে সম্পর্কেও বিশদ তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে ইডি।এ সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বীরভূম পুলিশের সুপারিন্টেনডেন্ট শ্যাম সিং। এক ইডি আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘এখনও পর্যন্ত আমরা কোনও মামলা দায়ের করিনি। উত্তরের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।’অন্য দিকে, বুধবার বীরভূম জেলা প্রশাসনের ডাকা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেনি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, মেলা প্রাঙ্গনে পাঁচিল তোলার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে চলেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা।