উত্তরবঙ্গের আকাশে বৃষ্টি নেই। আর তার জেরে ক্ষতির মুখে পড়ছে চা–পাতা। এই বৃষ্টি না হওয়ায় একদিকে চা–পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে চেষ্টা করে চা–পাতায় জল দিলেও সেখানে জমছে ধূলো। এই পরিস্থিতিতে চা–পাতার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে খবর প্রকাশ্যে এসেছে। অনেক জায়গায় এই চা–পাতা বাঁচাতে পাইপ দিয়ে জল ছেটানো হচ্ছে। তবে সেই চা–পাতায় ধুলো এসে জমে যাচ্ছে। কারণ বৃষ্টি নেই। উত্তরবঙ্গের চা বলয়ে প্রথম ‘ফ্লাশ’–এর উৎপাদন তাই ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের মতো এই মরসুমের শুরু থেকেই আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় ভুগছে চা–শিল্প।
এদিকে উত্তরবঙ্গের চা সর্বত্র জনপ্রিয়। তাই এই চা–পাতার চাহিদাও বেশি। শীত চলে গিয়েছে। এখন বসন্ত। এই মধ্যবর্তী সময়ে বৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক নিয়ম। বসন্ত এসে গেলেও বৃষ্টি এল না। তাই চা–পাতার ক্ষতি হতে চলেছে। এই বৃষ্টি চা–পাতার পক্ষে অত্যন্ত ভাল। এখানের চা–বাগানের শ্রমিকদের থেকে জানা গিয়েছে, বসন্তের বৃষ্টিতে চা–গাছের পাতায় রস ছড়িয়ে পড়ে যায়। তাতে স্বাদ এবং মান অত্যন্ত উৎকর্ষের হযে ওঠে। যে জন্য চায়ের প্রথম ‘ফ্লাশ’–এর দাম ও চাহিদা দুটোই বেশি। তাই উত্তরবঙ্গের প্রথম ‘ফ্লাশ’–এর চা পাতার বেশিরভাগটাই রফতানি হয়ে যায়। প্রথম ‘ফ্লাশ’–এর পাতাও বড় বড় সংস্থাগুলি সরাসরি কিনে নেয়। এবার উৎপাদনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বৃষ্টি।
আরও পড়ুন: রাত পোহালেই তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশ, ডিম–ভাতের সঙ্গে আর কী থাকছে মেনুতে?
অন্যদিকে চা–বাগানগুলি সূত্রে খবর, বৃষ্টিহচ্ছে না বলে চা–গাছের গোড়া শুকিয়ে যাচ্ছে। চা–গাছের মাটিতে যে পরিমাণ জল দরকার তা বৃষ্টিই দিতে পারে। সেটা সম্ভব হচ্ছে না। এই বৃষ্টি না হলে চা–পাতার ভিতরে রস ছড়িয়ে পড়ে না। আর রস ছড়িয়ে না পড়লে পাতায় স্বাদ বা গন্ধ আসে না। এই বিষয়টি নিয়ে এখন আলোচনা চলছে। ‘টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া’ ডুয়ার্স–তরাই শাখার বার্ষিক সাধারণ সভায় এই সমস্যাটি নিয়ে আলোচনা হয়। এই আলোচনায় চা–বাগানেও স্থায়ী জলসেচ ব্যবস্থা করার প্রস্তাব উঠে এসেছে। এই সংগঠনের সচিব সুমিত ঘোষ বলেন, ‘আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় জলসেচ এখন চা বাগিচার স্থায়ী চাহিদা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’